facebook twitter tumblr instagram linkedin
  • Home
  • On Topic
    • On Topic
    • Short Codes
  • Special Day
  • FEC

Mahdi Hasan

১। ফাইনম্যান এর আইকিউ ছিল ১২৫। কলেজে প্রবেশের আগেই তিনি ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাস ও ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস জানতেন। গণিতে তার অপার আগ্রহ ছিল, তিনি জুনিয়র স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে স্কুলের গণিত দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন এবং নিত্য নতুন সমস্যা সমাধান করার কৌশল আবিষ্কার করা তার নেশার মত ছিল। এছাড়া গণিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রতীকের নিজস্ব রূপ উদ্ভাবন করাটাও তার শখ ছিল, তার আত্মজীবনীতে তিনি বলেছেন ত্রিকোণমিতির সাইন, কোসাইন এবং অন্যান্য অনেক প্রচলিত প্রতীকের নিজস্ব রূপ তিনি ব্যবহার করতেন।

২।ফাইনম্যান অসাধারণ ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। ছাত্রদের কোন কিছু সহজভাবে বোঝানোর ব্যাপারটি তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন এবং পাঠ্য বিষয় ছাত্রদের হৃদয়ঙ্গম করাকে নিজের নৈতিক দায়িত্ব মনে করতেন। তিনি মনে করতেন একজন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে যেকোন বিষয় বোঝানো সম্ভব, তা না করতে পারার মানে হল শিক্ষক নিজে বিষটি সম্পূর্ণরূপে অনুধাবন করতে পারেন নি। তার বিভিন্ন লেকচার এবং বক্তৃতায় এ নীতির ছাপ স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়।

না বুঝে পদার্থবিজ্ঞান বা বিজ্ঞানের যে কোন বিষয় পড়াকে ফাইনম্যানের অর্থহীন মনে হত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময়েই লক্ষ্য করেছিলেন তার সহপাঠীরা যা শেখে তা অনেকটাই গ্রন্থগত; পরবর্তীকালে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ব্যক্তির মধ্যেও এমন সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করেন। কর্নেলে অধ্যাপনারত অবস্থায় ফাইনম্যান কিছুদিনের জন্যে পরিদর্শক অধ্যাপক হিসেবে ব্রাজিলে যান। সেখনে গিয়ে তিনি খেয়াল করেন সেখানকার বিজ্ঞান শিক্ষার দৈন্যদশা এবং পাঠ্যপুস্তকের দুর্বলতা। তিনি সে দেশের শিক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় কনফারেন্সে অকুন্ঠচিত্তে এ বিষয়ে সমালোচনা করেন। তিনি যা ভালো মনে করতেন তা করতে তিনি কখনো দ্বিধাবোধ করতেন না। তিনি নির্বুদ্ধিতা বা ভান করা পছন্দ করতেন না এবং যারা তাকে বোকা বানাতে চাইত তাদের তিনি সহজে ছেড়ে দিতেন না।
রিচার্ড ফাইনম্যান কে ছিলেন, তা গুগলে সার্চ করে উইকিপিডিয়া থেকে জেনে নিন।
তবে আমি এতটুকুই বলতে পারি, ম্যানহাটন প্রকল্পে যে মানব কম্পিউটার ব্যবহার করা হত, ফাইনম্যান সেখানে গণনার তত্বাবধান করতেন।

Link:

  1. https://www.facebook.com/mahasai716/posts/1890233734565623
  2. https://www.facebook.com/EngineersDiary16/photos/a.1519425128146476/2232810303474618/?type=3&theater
  3. https://www.facebook.com/EngineersDiary16/photos/a.1519425128146476/2233076463448002/?type=3&theater
  4. https://www.facebook.com/EngineersDiary16/photos/a.1519425128146476/2233225190099796/?type=3&theater
  5. https://www.facebook.com/FECSRC/photos/a.462082744258675/619634628503485/?type=3&theater
  6. https://bigyan.org.in/2018/12/14/value-of-science/?fbclid=IwAR3DnDmJoeM2-J0PwwKQP67xsa103lKpUDEeIsuoYDNxNHQpS5QApwPuHHI
  7. https://www.facebook.com/groups/ScienceStudy.EngineersDiary/permalink/352249238759009/
  8. https://www.facebook.com/EngineersDiary16/photos/a.1066274360128224/2233294046759577/
  9. https://www.facebook.com/EngineersDiary16/photos/a.1066274360128224/2233353666753615/
May 11, 2019 No comments
সেলসিয়াস স্কেল চেনে না কে? বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে সবাইকেই এই স্কেল নিয়ে পড়তে হয়। আজকে এই স্কেলের প্রণেতা এন্ডার্স সেলসিয়াস এর জন্মদিন । জন্ম: ২৭ নভেম্বর, ১৭০১ - মৃত্যু: ২৫ এপ্রিল, ১৭৭৪) এই বিজ্ঞানীর জীবনী নিয়ে উইকিপিডিয়ায় লেখা আছে। তাই বেশীকিছু না লিখে আমরা বরং অন্যদিকে নজর দিই। বিশ্বের প্রতিটি দেশ তাপমাত্রা মাপে সেলসিয়াসে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র বাদে। যুক্তরাষ্ট্র মাপে ফারেনহাইটে। সেলসিয়াস একটা যুক্তিসঙ্গত মাপকাঠি। সেলসিয়াসে হিমাঙ্ক ধরা হয় শূন্য ডিগ্রী আর স্ফুটনাঙ্ক ১০০ ডিগ্রী। অন্যদিকে ফারেনহাইটের হিসাবটা আবার বিদঘুটে। ফারেনহাইটে হিমাঙ্ক ধরা হয় ৩২ ডিগ্রী আর স্ফুটনাঙ্ক ২১২ ডিগ্রী। আগের ফারেনহাইটে হিসাব বাদ দিয়ে সবাই মেট্রিক পদ্ধতিতে চলে যাওয়ার সময় থেকে সেলসিয়াসের হিসাব চালু হয়েছে। শুধু আমেরিকাই গোঁ ধরে আগের ফারেনহাইট হিসাবটা আঁকড়ে আছে। অথচ এর পরিণতি অনেক সময় বিপর্যয়করও হয়েছে। মার্কিন হিসাব আর মেট্রিক হিসাবের মধ্যে রূপান্তরের একটি বিভ্রাটে নাসার সাড়ে ১২ কোটি ডলার মূল্যের একটি নভোযান মঙ্গলগ্রহের বায়ুম-লে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাপমাত্রা পরিমাপের এমন এক প্রাচীন ব্যবস্থা আঁকড়ে ধরে আছে কেন? এর জন্য দায়ী হলো ইতিহাসের সর্বকালের দুই বড় ভিলেনÑ ব্রিটিশ উপনিবেশবাদ ও মার্কিন কংগ্রেস। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে অর্থাৎ আজ থেকে ৩শ’ বছর আগেও ফারেনহাইট পদ্ধতিটা সত্যিই খুব দরকারী ও কার্যকর ছিল। এই পদ্ধতির আবিষ্কর্তা ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট নামে এক জার্মান বিজ্ঞানী। তরুণ বয়স থেকে তিনি থার্মোমিটার নিয়ে বেশ আচ্ছন্ন ছিলেন। কারণ সে সময় তাপ মাপার ব্যাপারটা এক বড় সমস্যা ছিল। ২৮ বছর বয়সে একজোড়া থার্মোমিটার তৈরি করে তিনি বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। দুটো থার্মোমিটার একই রিডিং দিয়েছিল। এর আগে কেউ এ কাজ করেনি। তাঁর ব্যবহৃত স্কেলকেই আজ বলা হয় ফারেনহাইট। পানি ও লবণের দ্রবণ যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় ঘটে, ফারেনহাইট সেটাকে ধরেছিল শূন্য ডিগ্রী। তিনি মানুষের শরীরের গড় তাপমাত্রা পরিমাপ করেছিলেন ৯৬ ডিগ্রী, যদিও তা ঈষৎ বেঠিক ছিল। ফারেনহাইটের হিসাব অনুযায়ী স্ফুটনাঙ্ককে ২১২ ডিগ্রী ও হিমাঙ্ক ৩২ ডিগ্রীতে ধার্য করা হয়। ১৭২৪ সালে ফারেনহাইট ব্রিটিশ রয়াল সোসাইটির সদস্যপদ লাভ করেন এবং তাঁর পদ্ধতি গোটা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য অনুসৃত হয়। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে বিশ্বের বিশাল ভূখ- ব্রিটেনের করতলগত হয়। এর ফলে তাপামাত্রা পরিমাপের ফারেনহাইট পদ্ধতিও বিশ্বের অধিকাংশ এলাকায় আদর্শ তাপমাত্রায় পরিণত হয়। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে তাপামাত্রা পরিমাপের আধুনিক মেট্রিক পদ্ধতি ‘সেলসিয়াস’ চালু হয়ে যায়। সেলসিয়াস পদ্ধতি ১৭৪২ সালে আবিষ্কার করেছিলেন সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এন্ডার্স সেলসিয়াস। ১৯৭০ সালে সেলসিয়াস পদ্ধতিকে মেট্রিক পদ্ধতির অঙ্গীভূত করা হয়। সহজ-সরল রূপ ও বৈজ্ঞানিক উপযোগিতার কারণেই মেট্রিক পদ্ধতি এবং সেই সঙ্গে সেলসিয়াস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাজ্যে সকল পরিমাপ মেট্রিক পদ্ধতিতে শুরু হয় ১৯৬৫ সালে। ব্রিটেনের সাবেক সমস্ত উপনিবেশেও একই ব্যাপারে ঘটে। কোন কোন দেশে ব্রিটেনের আগে ঘটে, যেমন ভারত। আবার অন্যদের পরে ঘটে, যেমন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। একই সময় সর্বত্র এসব পরিবর্তন লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রও মেট্রিক পদ্ধতিতে যাবার কথা ভাবতে থাকে। মেট্রিক পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য কংগ্রেস ১৯৭৫ সালে একটি আইনও পাস করে। গঠিত হয় মেট্রিক বোর্ড। কিন্তু সেই আইন আর কার্যকর হয়নি, এর প্রতি বিরোধিতার কারণে। কার্যকর হতে পারেনি, কারণ মেট্রিক পদ্ধতি প্রবর্তনকে বাধ্যতামূলক না করে করা হয়েছিল স্বেচ্ছাভিত্তিক। এ ব্যাপারে জনগণের মতামতের বড় ভূমিকা ছিল। বিপুলসংখ্যক মানুষ তাপ বা ওজন পরিমাপের নতুন পদ্ধতি শিখতে চায়নি। হাইওয়েতে কিলোমিটার সাইন দেয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে গাড়ি চালকরা। আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা সেলসিয়াসে পূর্বাভাস পাঠের কথা শুনে ক্ষেপে যায়। ক্রেতারা কিলোগ্রামে কেনাকাটার সম্ভাবনার কথায় বিরক্ত হয়। জনগণের এমন মন-মেজাজ লক্ষ্য করে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান ১৯৮২ সালে মেট্রিক বোর্ড ভেঙ্গে দেন। কংগ্রেস যেভাবে এই আইনটি তৈরি করে, তাতে এর বাস্তবায়ন মুখ থুবড়ে পড়ে এবং আমেরিকা যে ফারেনহাইটে-ই তাপমাত্রা মাপবে, তা সুনিশ্চিত হয়। মেট্রিক পদ্ধতির বাইরে থাকার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আজ বিশ্বে কার্যত একা। শুধু বার্মা ও লাইবেরিয়া তার সঙ্গে আছে। - Muhammod Mahdi Hasan Saikot Wiki Link
November 26, 2018 No comments
সিঙ্গার কর্পোরেশনের জন হয়েছিলো এখন থেকে ১৬৭ বছর আগে, ১৮৫১ সালে।

তবে আজকের দিনের বিশেষত্ব হল , আজ স্যার আইজ্যাক ম্যারিট সিঙ্গার এর জন্মদিন।
Edward Harrison May - Isaac Merrit Singer (October 27, 1811 – July 23, 1875)

মানুষ পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার পর ধন ধৌলত আর সম্মান রেখে যায়, স্যার ম্যারিট সেসাথে রেখে গেছেন ২৪ জন সন্তান!

ম্যারিট ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বলা হয়ে থাকে ইঞ্জিনিয়ারের গফের অভাব হলেও বউ এর অভাব হয়না, তবে সিঙ্গার এর ক্ষেত্রে দুটোই পর্যাপ্ত ছিলো। একে একে সে ৫ জন এর সাথে সংসার পাতে!

হাতের পরিবর্তে যন্ত্রের সাহায্যে সেলাইয়ের প্রচলন হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। বিশ্বের প্রথম শিল্প বিপ্ল­বের সময় সেলাই মেশিন উদ্ভাবিত হয়। তবে এর আগেও সেলাইয়ের কাজে খুব সাধারণ যন্ত্রের ব্যবহার ছিল। ১৮৪৬ সালে এলিয়েস হোউই এই যন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। প্রথমদিকে মেশিনগুলোর নকশা এমনভাবে করা হয়েছিল যা শুধু শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা যেত। তখন যন্ত্রবিশারদ স্যার আইজ্যাক ম্যারিট সিঙ্গার শিল্প-কারখানার পাশাপাশি ঘরে ব্যবহার উপযোগী সেলাই মেশিন তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। ১৮৫১ সালে ধরা করা মাত্র ৪০ ডলার পুঁজি নিয়ে বাসায় ব্যবহার উপযোগী সেলাই মেশিন উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করেন। তার নামানুসারেই কো¤পানির নাম রাখা হয় সিঙ্গার। তিনিই প্রথম সেলাই কলে স্কেল সংযোজন করেন। সিঙ্গার মূলত এলিয়াসের সেলাই মেশিনের সামান্য পরিমার্জন সাধন করেন। মেশিনের চাহিদার কারণে এর বিক্রি বেড়ে যায়। বাড়তে থাকে পুঁজির পরিমাণও।

১৮৭৬ সালে সিঙ্গার মাল্টিন্যাশনাল কো¤পানিতে পরিণত হয়। কো¤পানিটি পৃথিবীর বৃহত্তম ব্যক্তিগত সেলাই কল তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৮৮৯ সালে প্রথম ইলেকট্রিক সেলাই কল বাজারে আনে সিঙ্গার। তখন পৃথিবীজুড়ে এ নমুনার সেলাই মেশিন ছড়িয়ে পড়ে। এ মেশিন ব্যবহৃত হয় হোসিয়ারি শিল্পে। হাত বা পাচালিত মেশিনগুলোর চেয়ে ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে নকশা করা, ফুল তোলা ও বিশেষ ধরনের সেলাইসহ সাধারণ কাজও সহজে এবং কম সময়ে করা যায়। ফলে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।

ব্রিটিশ আমলে ১৯০৫ সালে সিঙ্গার প্রথম বাংলাদেশে আসে। পরে ১৯২০ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি শাখা চালু করে। বর্তমানে সারা দেশেই এই কো¤পানির আউটলেট রয়েছে। বাংলাদেশে একাধিক কারখানাও করেছে।

১৯৮৩ সালে সিঙ্গার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। ২০০১ সালে তারা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৮৮ টাকা। তাদের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৭৭ কোটি টাকা। বাজারে প্রায় ৭ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার রয়েছে। প্রতিবছর তারা মোটা অঙ্কের লভ্যাংশ দিচ্ছে।

জন্মদিনে এই মহান অভিনেতা, ব্যবসায়ী, উদ্ভাবক, জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনুরাগী, প্রেমসম্রাট ও সর্বপরি প্রকৌশলীকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

উইকি
আমাদের সময় 
October 26, 2018 No comments
বলা হয়ে থাকে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে পানির জন্য।

বিশ্বে ৭৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ পানি পায় না। ২৪৮ কোটি মানুষ সঠিক পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার আওতায় নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, বেশির ভাগ পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ লোকের দৈনিক চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন ৭ দশমিক ৫ লিটার পানি। মৌলিক চাহিদা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য চাহিদা ও বিশুদ্ধ খাদ্য পানীয়ের জন্য প্রতিজনে ২০ লিটারের মতো পানি প্রয়োজন হতে পারে। বর্তমানে দেশের ৯৮ ভাগ খাবার ও শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে ৮০ ভাগ পানি ভূ-গর্ভস্থ থেকে সরবরাহ করা হয়। 



আজ (২২ মার্চ) বিশ্ব পানি দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হবে। সরকারিভাবে আগামী ২৭ মার্চ দিবসটি পালন করা হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এবারের প্রতিপাদ্য Water for Nature. 

১৯৯ ৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভা এ দিনটিকে পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়।


আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পর ১৯৯৩ সাল থেকে পানি সংরক্ষণ ও উন্নয়নের ওপর গণসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয়। সারাবিশ্বে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হচ্ছে এ দিনটি।


এ দিবসের ২০১৬ সালের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ওয়াটার অ্যান্ড জবস অর্থাৎ পানি এবং কাজ। পরিসংখ্যানে প্রকাশ, পৃথিবীতে মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক জনশক্তিই পানি সংক্রান্ত এবং পানিকে ঘিরে জীবিকা নির্বাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত সে সংখ্যা প্রায় দেড় বিলিয়ন। পৃথিবীপৃষ্ঠের তিন-চতুরাংশ পানি। শতকরা হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৭১.৪ শতাংশ। এত পানি থাকার পরও চারদিকে শুধু পানির অভাব। আর সেই অভাবটি হলো বিশুদ্ধ পানির। কারণ ৭১.৪ শতাংশ পানির মধ্যে ৯৭% ভাগ পানিই লবণাক্ত পানি, ২% হলো বরফ এবং বাকি মাত্র ১% হলো বিশুদ্ধ পানি। হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের মিলিত রাসায়নিক পদার্থের নামই যে পানি তা অনেক আগেই রসায়নবিদরা আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু এটি যে একটি যৌগ তা ১৯৭৮ সালে বিজ্ঞানী ক্যাভেন্ডিস আবিষ্কার করেছিলেন। অর্থাৎ সেখানে রাসায়নিকভাবে দুই পরমাণু হাইড্রোজেন ও এক পরমাণু অক্সিজেন মিলিত হয়ে এক অণু পানি উৎপন্ন করে থাকে। পানির রাসায়নিক গুণাবলির মধ্যে রয়েছে, এর কোনো অম্লত্ব কিংবা ক্ষারকত্ব নেই। অর্থাৎ পানির পিএইচ মান হলো সাত (৭.০)। পানি নিয়ে চিরন্তন ও সর্বজনীন একটি স্লোগান হলো পানিই জীবন। তবে সেই জীবনের জন্য পানিই আবার কখনো কখনো মরণের কারণও হতে পারে। যেহেতু পানিই জীবন, সেজন্য সেই পানি খোঁজ করার জন্য, একফোঁটা পানির অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য মানুষ চাঁদ, মঙ্গলগ্রহ ইত্যাদি স্থানে অনুসন্ধান চালাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মহাবিশ্বে এখন পর্যন্ত পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ যেখানে পানি রয়েছে। আর পানি রয়েছে বলেই মানুষসহ অন্যান্য জীবের অস্তিত্ব রয়েছে। 


পৃথিবীর সকল প্রাণেরই উৎস পানি। ৭০০ কোটি মানুষ আজ খাদ্য ও জ্বালানির মতো মৌলিক বিষয়ের পাশাপাশি যে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা হচ্ছে, সবার জন্য বিশুদ্ধ ও পর্যাপ্ত খাবার পানির যোগান। ওদিকে যে সব অঞ্চলে পানিস্বল্পতা রয়েছে, সেখানে বিভিন্ন নদী নিয়ে পানি-যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল। যেমন, লেবানন-ইসরায়েলের মধ্যে হাসবানি নদী; তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যে ইউফ্রেটিস; সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে গ্যালিলি সাগর; ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জর্দানের মধ্যে জর্দান নদী; সুদান, মিশর, ইথিওপিয়া ও আরও কিছু দেশের মধ্যে নীলনদ; সেনেগাল ও মৌরিতানিয়ার মধ্যে সেনেগাল নদী; ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে হেলম্যান্ড নদী নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিবাদ তো আছেই।


বিজ্ঞানের জয়জয়কার যখন আধুনিক বিশ্বে, তখন প্রায় ১৫০ কোটিরও বেশি মানুষের জন্য নেই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা। প্রতি বছর শুধু পানিবাহিত রোগে ভুগে মারা যাচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ। আমাদের দেশে পানযোগ্য পানির প্রধান উৎস, নদী-খাল-বিল, হাওর-বাওড়, পুকুর ও জলাশয়। এক সময় এ দেশে ১৩শর বেশি নদী থাকলেও বেশিরভাগই এখন মৃত। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ হিসাবে বর্তমানে দেশে নদীর সংখ্যা ৩১০।
পৃথিবীতে যে ২৬৩ স্বাদু পানির হ্রদ ও নদী অববাহিকা রয়েছে, তা বিশ্বের ১৪৫ দেশের সীমানায় অবস্থিত। এ অববাহিকাগুলোতেই পৃথিবীর বড় বড় সভ্যতার বাস। টাইগ্রিস-ইউফ্রেটিসে শাতিল আরব; ইউরোপের দানিয়ুব নদী অববাহিকায় সতেরটি; কঙ্গো, নাইজার, নীল, রাইন, জাম্বেজি নদী অববাহিকায় নয়টির বেশি এবং আমাজন, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা, মেকং, ভলগা নদী অববাহিকায় কমপক্ষে পাঁচটি দেশে সভ্যতা রয়েছে। ঐতিহাসিক সত্য হচ্ছে, এসব আন্তঃসীমান্ত নদী বা হ্রদ যুগে যুগে একাধিক দেশের মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি করেছে। সময়-পরিক্রমায় আমাদের পরিবেশ যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে, সে সঙ্গে বাড়ছে পানির চাহিদা যা ভবিষ্যতে সংঘাত আরও নিশ্চিত করবে। জাতিসংঘের জন্মের পর গত ষাট বছরে পৃথিবীতে কম আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়নি। তবু একাধিক দেশের মধ্যে ঘটছে সংঘাতের ঘটনা।

দুঃখের বিষয়, যেগুলো আছে তাতেও পানি নেই। তিস্তার ৬৫ কিলোমিটার উজানে গজলডোবায় ভারত ব্যারাজ নির্মাণ করে ৮৫ শতাংশ পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে এটি এখন জলশূন্য ধু ধু প্রান্তর। যে নদী দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পাঁচ থেকে আট হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হত, সেখানে এখন মাত্র পাঁচশ কিউসেক মিলছে। পানি ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, এর ফলে সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের ৮০ হাজার হেক্টর জমি। ফলে এই জমিতে ধান চিটা হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের হিসাব মতে, এতে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকার মতো।


ভারতের পুনের হোটেলগুলোতে গ্লাসের অর্ধেক পানি সার্ভ করা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪০০রেস্টুরেন্ট পানির ব্যবহার কমাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে কালিঙ্গা নামক এক রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ জন গ্রাহক আসেন এবং কেবল আধা-গ্লাস পানি সার্ভ করার মধ্য দিয়ে রেস্তোরাটি দৈনিক প্রায় ৮০০ লিটার পানি বাঁচাতে পেরেছে।


হোটেল কর্তৃপক্ষের এই ব্যতিক্রমী উদোগের ফলে পানির অপচয় অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে। কারণ, প্রায়শই দেখা যায়, আমরা রেস্তোরাঁতে গিয়ে গ্লাসের পুরো পানি খাইনা এবং বেশীরভাগ পানি অপচয় করি। এজন্য এই উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসনীয়। 


তবে আধা গ্লাস পানি দেয়ার পরেও যে পানি থেকে যায়, সেগুলো নষ্ট না করে জমিয়ে রাখা হয় এবং ফ্লোর ধোয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। 


আমাদের দেশে আমরাও এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি। 


গত বছরের শুরুর দিকে সরকারের রিপোর্টে বলা হয়, ভারত সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পানির সংকটে ভুগছে। ৬০০ মিলিয়ন মানুষ এর কারণে কোন না কোনভাবে সমস্যার শিকার।


বিভিন্ন গবেষণা বলছে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সতর্ক করে বলা হয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ পানি ফুরিয়ে যাবে ২১টি শহরে। মে মাসে জনপ্রিয় পর্যটন শহর শিমলা পানিশূন্য হয়ে যায়। গতবছর ব্যাঙ্গালোর শহর জলহীন হয়ে যাওয়ার খবর আসে।


বাংলাদেশের উত্তারাঞ্চলে গ্রীষ্ম মৌসুমে খরা বা পানি সংকটে পড়ে কৃষকদের খুবই দুরূহ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এর জন্য এখনি উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

March 22, 2018 No comments
Older Posts Home

Labels

On Point On Topic Special Day

recent posts

Blog Archive

  • April (1)
  • March (2)
  • February (1)
  • January (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • March (1)
  • February (1)
  • October (1)
  • March (1)
  • April (1)
  • March (2)
  • November (1)
  • May (1)
  • November (3)
  • October (2)
  • September (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • June (1)
  • May (2)
  • April (2)
  • March (5)
  • February (1)
  • February (1)

Designed By | Distributed By GooyaabiTemplates