facebook twitter tumblr instagram linkedin
  • Home
  • On Topic
    • On Topic
    • Short Codes
  • Special Day
  • FEC

Mahdi Hasan


 


১। ইউনুসের সাথে বৈঠক করার মাধ্যমে ভারত হাসিনার পতন স্বীকার করে নিলো। এর আগে তারা নানাভাবে চেষ্টা করে গেছে হাসিনাকে আবার বসাতে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছিলো, কিন্তু ভারত তাদের প্রদেশ পতন মানতে পারছিলোনা কোনোভাবেই, অথচ চীন হাসিনা যাওয়ার এক সপ্তাহ পরেই সব দলের সাথে মিটিং করে হাসিনাকে হজম করে ফেলেছিলো। এমনকি বেশকিছু তরুণদের চীনে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেলো, মেডিকেল ট্যুরিস্ট নিলো।


অন্যদিকে ভারতকে সমঝোতায় আনতে বাংলাদেশ তাদের দুই শত্রু পাকিস্তান ও চীনের সাথে সম্পর্ক দ্রুত উন্নয়ন ঘটালো, এমনকি চীনে বসে নিজেকে ৭ বোনের গার্ডিয়ান হিসেবেও ঘোষণা করলো।


ফলে বাধ্য হয়েই এক প্রকার "এই লোকটাকে থামাতে" মোদী মিটিং এ রাজি হয়েছে। ফলে এটা আমাদের কূটনৈতিক বিজয় এবং ভারতের চোখে হাসিনার পতন হিসেবে প্রতিষ্ঠা হলো।


২। আলোচনার টেবিলে রেগুলার আলাপই এসেছে। পরের মিটিং এ হয়তো বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার বিষয়গুলো আদায়ের জন্য মূল দেনদরবার হবে। ভারতের কাছে আমাদের মূল পাওনা পানি৷ গঙ্গা চুক্তি ২৬ এ শেষ হবে, তিস্তা চুক্তি এখনো হয়নি, ফেনি নদীর পানি বন্টন এবং শিলিগুড়ি করিডোর ব্যবহার বিষয়গুলো মূল আলোচ্য বিষয় হবে। এছাড়া মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার নিয়ে আগের চুক্তি নিরাপত্তা ইস্যুতে পুনর্মূল্যায়ন হওয়া উচিৎ।



৩। মোদির ইন্টারপ্রেটার ব্যবহার নিয়ে হাসাহাসি বা তার আগে থেকে এসে বসে থাকা -  জিনিসগুলো নিয়ে ট্রল দৃষ্টিকটু। এর আগে আমরা আসিফ ও নাহিদকেও ইন্টারপ্রেটার ব্যবহার করতে দেখেছি। এমন না যে সে ইংরেজি জানেনা বা ইংরেজিতে কথা বলতে পারেনা। তবে, আলোচনার সময় বাড়তি সময় পাওয়ার জন্য অনেকেই ইন্টারপ্রেটার ব্যবহার করে, এটাও একটা কুটনৈতিক কৌশল। এছাড়া তাকে চাওয়ালা বলে ডাকাটাও অভদ্রতা। তার উপযুক্ত উপাধি হতে পারে গুজরাটের কসাই। তবে টুইটারে ইংরেজিতে এসব নিয়ে পোস্ট করা যেতে পারে ভারতীয় মিডিয়ার কাউন্টার হিসেবে। রাজনৈতিক বিবাদে ব্যক্তিগত দুর্বলতা আলোচনা করাটা অসভ্যতা।


৪। ভারতকে শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করা আমাদের জন্য লাভজনক না। বরং তাদেরকে আমাদের উপর নির্ভরশীল হিসেবে ট্রিট করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করতে হবে। যারা রাজনীতির খবর রাখেন, তাদের কথাবার্তায় সংযমি হওয়া উচিৎ, অন্যরা কোন কথা শুনে খুশী হবে, সেগুলো ভেবে নিজের মত দিলে নিজস্বতা বলতে কিছু থাকবেনা।


৫। অন্য সব দেশের সাথে বৈঠকে ইউনুস অভ্যুত্থানের চিত্র বা বই দিলেও মোদিকে দিয়েছেন ১০ বছর আগে তোলা একটা যৌথ ছবি। অন্য দেশকে বাংলাদেশের মানুষের কৃতিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা ছিলো, তবে ভারতের ক্ষেত্রে তিনি কৃতিত্বের চেয়ে নিজেদের বন্ধুত্বটা প্রধান হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন, বোঝাতে চেয়েছেন যে, দেখো, আমি তোমাদের আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম, তোমাদের শত্রু নই। আমাদেরকে বন্ধু হিসেবে দেখলে তোমাদের ক্ষতি নেই।


৬। হাসিনা এখন ভারতের গলার কাঁটা। হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত এখন বিশ্বের চোখে বাংলাদেশের কাছে নিঁচু অবস্থানে আছে। ভারতের কোনো বিষয়ে আমরা সাধারণত কথা বলিনা, কিন্তু হাসিনা থাকায় আমরা বারবার খবরদারি করতে পারি যে, ওই মহিলাকে চুপ থাকতে বলুন। এটা অনেক অপমানজনক কথা, যেটা হাসিনা না থাকলে তাদের শুনতে হতো না। নিজেদের আত্মসম্মানবোধ থাকলে মোদি নিশ্চয় সেটা উপলব্ধি করে ফেলবেন আজকেই।



April 04, 2025 No comments

 


 

ধর্ষণ এর ঘটনা আলোচনায় আসলেই শাস্তি ফাঁসির দাবীতে অনেকে স্বোচ্চার হয়ে ওঠেন।

এটা নতুন কিছুনা, গত ১০ বছরের আমার দেখা সব আলোচিত ঘটনাতেই এই দাবী এসেছে।

তবে এবার সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফাঁসি চেয়ে মিছিল বের হয়েছে প্রথমবার- ঢাবি ও রাবিতে।

আইন পড়ানো হয়, এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন এরকম দাবী নিয়ে রাস্তায় নামে, সেটা সে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানমানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

শুধু ধর্ষণ না, আরো অনেক অপরাধ আছে, যেখানে সবাই অপরাধীকে মেরে ফেলতে চায় সরাসরি। ধর্ষণ, সড়ক দুর্ঘটনা, এমনকি দুর্নীতিতেও।

১। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ এর ১ ও ২ উপধারায় ধর্ষণ চেষ্টা বা ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড বা মৃত্যুদন্ডের কথা লেখা ছিলো। ২০২০ সালে তা সংশোধন করে "মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড" দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। এবং বিচার শেষ করার জন্য ১৮০ দিন বেঁধে দেয়া হয়। যদিও এরমধ্যে বিচার শেষ না করতে পারলে কী হবে, তা লেখা না থাকায় আইনজীবীরা নানা অজুহাতে মামলার সময় দীর্ঘায়িত করতে থাকে। আইনে কড়া শাস্তি থাকার পরেও কেন ধর্ষণ কমানো বা থামানো যায়নি, তা আমাদের ভাবতে হবে।


এখন বিবেচনায় আনতে হবে যে, শাস্তি শুধু শাস্তি হিসেবেই দেয়া হয়না। শাস্তি দেয়া হয় ভয় দেখানো ও শুধরানোর জন্য। যে শাস্তিতে নিজের ভুল বুঝে শুধরানোর অপশন থাকেনা, সেটা শাস্তি হয়না। এজন্য পরিকল্পিত খুনের বিপরীতেই শুধুমাত্র দীর্ঘ আইনী বিচার বিশ্লেষণ শেষে আরেকজনের প্রাণ নেয়া হয়। শুধু খুনের জন্যেই অনেকগুলো ধারা আছে, যেখানে পরিকল্পিত হত্যা(৩০২) ছাড়া বাকিগুলোতেও মৃত্যুদণ্ড নেই।

বাংলাদেশের মতো দেশে আইনী মানবশক্তি এত অপ্রতুল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় যেতে হয় যে, এখানে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগের প্রসেসগুলোই যথেষ্ট শাস্তি দায়ী। এছাড়া থাকে ভুল বিচার, যেখানে শক্তিমত্তার প্রভাব থাকে।

এসব বিবেচনায় ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত হত্যা ছাড়া অন্যান্য অপরাধে জীবননাশ করা হয়না। ইউরোপ পুরোপুরিভাবে মৃত্যুদান থেকে সরে এসেছে এবং বাংলাদেশকে অনেকবার চাপ দিয়েছে সরতে। হাসিনা বিদায়ের পর মানবাধিকার কমিশনের প্রথম ভিজিটেও মৃত্যুদণ্ড বাদ দেয়ার জন্য আইনমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

যদি আমরা ধর্ষণ বা হত্যাব্যতিত অন্য অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিই, তাহলে এটা অপরাধীকে সর্বোচ্চ অপরাধে উৎসাহিত করবে।

যদি ধর্ষণ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়, এবং খুনের শাস্তিও এটা হয়, তাহলে সে ধর্ষণের পর ভিক্টিমকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইবেনা। এক্ষেত্রে জোর করে ফাঁসির রায় দেয়াটা ভিক্টিমের জীবন বিপন্নের কারণ হতে পারে। 

যদিও টাঙ্গাইলেই ২০১৮ তে ৪ জন, ২০২০ এ ৫জন ও ২০২২ এ ৩ জনকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের পর খুনের দায়ে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছিল। 

২। ২০১৯ এ সড়ক নিরাপত্তা আইন করার আগের মোটরযান আইনে দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত উভয় ক্ষেত্রেই ৩ বছরের জেল শাস্তি ছিলো। এতে অনেক ড্রাইভার দুর্ঘটনার পর আহত ব্যক্তিতে নিহতে পরিণত করতে চাইতো, কারণ আহত করা বা হত্যা, দুটার শাস্তি একই হচ্ছে। 

এজন্য নতুন আইনে নিহত হলে ৫, আহত হলে ৩ বছরের শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

সড়কের এই উদাহরণ অনুযায়ী, ধর্ষণ অপরাধেও মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এটা থামানো যাবেনা। বরং তখন ধর্ষণ গুলো খুনে পরিণত হবে। 


৩। বিচার বিভাগের উপর জনগণের ক্ষোভের খারাপ প্রভাবের একটা উদাহরণ হলো তারেক মাসুদ দুর্ঘটনা মামলা।

ততকালীন আইনে নিহত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছর থাকলেও, চালককে যাবজ্জীবন জেল দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ এটাকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করেছিলো।

কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, এতে বাস চালকের কোনো দোষ ছিলো না। বরং তারেকের গাড়ি হঠাৎ লেন পরিবর্তন করে সামনে চলে আসে, এবং বাস চালকের চেষ্টায় ক্যাথরিন মাসুদ বেঁচে যায়।

কিন্তু মানুষের চাপের কারণে বাস চালক শাস্তি পায়, পরে জেলে মৃত্যুবরণ করে।

৪। গতবছর বুয়েটের মাসুদ নামে এক ছেলে ৩০০ ফিট এলাকায় দ্রুতগামী কারের ধাক্কায় মারা যায়। এই ঘটনায় সবাই সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানিয়ে বেশ কিছুদিন আন্দোলন চালায়। ফলে গাড়ির ভেতরে থাকা সবাই এখনো জেলেই আছে, নয়তো জামিন পেয়ে যেতো। 

সর্বোচ্চ শাস্তি দিলেও, তার ৫ বছরের জেল হবে। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হলে আইন পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আনতে হবে, অথবা এটাকে পরিকল্পিত হত্যা হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। 

এখানে প্রব্লেম হলো, সড়কে যখন দুর্ঘটনা ঘটে, সেগুলো আপনি আইন বা শাস্তি দিয়ে আটকাতে পারবেন না। এরজন্য দরকার নানামুখী নিরাপত্তা - চালকের লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস, চালকের সুস্থতা। সব দুর্ঘটনায় যদি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, এবং পরিচিত কেউ নিহত হওয়ায় মানুষের আলোচনায় চলে আসে, তাহলে দেখা যাবে বিচারক ফাঁসির রায় দিয়ে দিবেন অন্যান্য ফ্যাক্ট বিবেচনায় না নিয়েই। এতে তারেক মাসুদ কেস ঘটার সুযোগ থাকবে। এখানে বুয়েটের মাসুদ ইস্যু যদিও আলাদা, সেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উপর মাদকাসক্ত ড্রাইভার গাড়ি তুলে দেয়। ফলে তার বেশী শাস্তি হওয়া উচিৎ। তবে, কতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আরো পর্যালোচনার দরকার আছে। মাদকের জন্য ৬ মাস, হত্যার জন্য ৫ বছর জেল, তার জন্য যথেষ্ট হবেনা। 

মূল আলোচনা হতে হবে, কিভাবে, কোন কোন ব্যবস্থা নিলে এই অপরাধগুলো কমানো যায়। শুধুমাত্র ঘাতকে শাস্তি দিয়েও যে খুব উপকার হচ্ছে, তাতো না। 

৫। ধর্ষণের ইস্যু সামনে আসলে, আমাদের আরো একটা চরিত্র সামনে আসে, তা হলো হারকিউলিস। ২০১৮ নির্বাচনের পর বেশকিছু আলোচিত ধর্ষণ ঘটনা সামনে আসে। তারপরেই ১৭ জানুয়ারী থেকে ১ ফেব্রুয়ারী এই দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনটি খুন হয়, যেগুলোর গলায় ঝোলানো পেপারে সে ধর্ষক ও এজন্য খুন হয়েছে - এমনটা লেখা থাকে। যদিও ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে বলে যারা দাবী করেছিলো, সেটা ডাক্তার প্রমাণ পায়নি। মোটামুটি অস্পষ্টতার মধ্যেই অভিযুক্তদেরকে মেরে ফেলা হয়। এবং শেষ দুজনকে কারা অপহরণ করেছে এ নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদনে জানা যায় অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ী ও টেকনোলজির সাথে রাষ্ট্রীয় একটি বাহিনীর ঢাকাস্থ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এই হারকিউসের কাজ তখন জনগণ ব্যাপকভাবে স্বাগত জানায়।

চলমান ইস্যুতেও অনেককে হারকিউলিসের জন্য আকাঙ্খা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কারণ, অজানা কারণেই এ অঞ্চলের মানুষজন সারাক্ষণ ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। 

৬। সবাই যদি রাস্তায় নেমে গিয়ে বিচারের চেয়ে ফাঁসির দাবী বেশী জানায়, তাহলে সেটা বিচারকে প্রভাবিত করে। যেমনটা হয়েছিল ২০১৩ গণজাগরণ মঞ্চ, ২০১৭ সালে তারেক মাসুদ দুর্ঘটনা মামলায়। 


তাই সরাসরি ফাঁসির দাবী নয়, অপরাধ কমানো ও যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আলাদা ট্রাইবুনাল করে ৬০ বা ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার দাবী জানানো যেতে পারে। তাছাড়া এই ধরনের ঘটনায় অপরাধ প্রমাণ করার জন্য ল্যাব ভিত্তিক প্রমাণ বেশী দরকার বিধায় যত দ্রুত করা যাবে, ততই সঠিক বিচার আসবে।

এক্ষেত্রে সরকার প্রভাবশালীদের ছাড় দেয়ার উদাহরনও আছে। জনরোষ থাকার পরেও বসুন্ধরা গ্রুপের আনভীরকে মুনিয়া হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়। সত্যতা আমরা বলতে পারবো না, কিন্তু এতে পরোক্ষভাবে যে আনভীর জড়িত আছে, সেটা ঘটনা প্রবাহ থেকেই বোঝা যায়। তবুও তাকে ছাড় দেয়াটা আইনের প্রতি উপহাস স্বরূপ। 

অন্যদিকে নারী নির্যাতন আইনে ৯০% ভুয়া মামলা হয় বলে প্রতিবেদন এসেছে, তাই এই ইস্যুটা সতর্কতার সাথে সামলাতে হবে।

এজন্য লোকবল বাড়ানো এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়ার বিকল্প নেই।

March 08, 2025 No comments

 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) বইমেলায় যাওয়ার পথে শহীদ মিনারে দেখলাম কয়েকজন ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। সেখানে কয়েকজন মবের বিরুদ্ধে, নিরাপত্তা বাড়ানো,  অতি সত্বর নির্বাচন ও জনগণের সরকারের দাবী জানাচ্ছেন।

এই দৃশ্যটা একটু অপরিচিত লাগলো, কারণ অনলাইন বা যেখানেই কেউ নির্বাচন নিয়ে কথা বলে, সেখানেই বিরূপ মন্তব্যের স্বীকার হচ্ছে। অনেকটা আওয়ামী সরকারের আমলের মতই। তখন লীগ বলতো নির্বাচন দিলে স্বাধীনতা বিরোধী দল সরকার গঠন করবে, তাই নির্বাচন দেয়া যাবে না। এখন সেই "স্বাধীনতা বিরোধী দলের সমর্থকরা" এবং যারা নতুন স্বাধীনতা এনেছে বলে দাবী করে উভয়ই নির্বাচনের নাম শুনলে লাফ দিয়ে উঠে। যদিও তারা সমোঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ঐক্য করতে পারতো। কিন্তু নিজেদের রাজনৈতিক দীনতায় পরিবেশ কলুসিত করে বিএনপির সহনশীল মনোভাবকে উস্কে দিয়েছে। এটা নিয়ে অনেকবার লিখেছি, কিন্তু এদের অন্ধ অনুসারীদের কারণে সেখানে লাভ কিছু হবেনা। তবে ভবিষ্যতে একটা বাক্য বলার মতো পাবে যে, বিএনপির কারণেই সংস্কার সম্ভব হয়নি।

মেলা থেকে ফেরার পথে দেখলাম রাজুতে ৩ গ্রুপ দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি।

একটা লীগ আমলের এম্পি মন্ত্রিদের লিস্ট টানিয়ে লীগ নিষিদ্ধ করার জন্য গন স্বাক্ষর নিচ্ছে। তাদের ব্যানারে লেখা ছাত্রজনতা।

লীগ নিষিদ্ধের দাবীতে তাদের বিভিন্ন দেশবিরোধী অপকর্মের প্রমাণ প্রজেক্টরে দেখাচ্ছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

আরেক দলে কিছু স্কুল পড়ুয়া ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার জন্য মিছিল করছে। এরপর নির্বাচন চাওয়াদের গালি দিচ্ছে, কেউ দেশের আইন শৃঙ্খলাকে নিয়ে কথা বলেনা, সবাই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারাহুড়া করছে, বোনদের ভয় নেই, তারা এখনো রাজপথ ছাড়েনাই। স্লোগান আর বক্তব্য দিয়ে এলাকা গরম করছে।

যেকোনো অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড চাওয়াটা এখন একটা রোগে পরিণত হয়েছে। সম্ভবত ১৩ এর শাহবাগে বিচার চাওয়ার পরিবর্তে ফাঁসি চাওয়ার দাবী শুরু হয়েছিলো। যেকারণে রায় পরিবর্তন করে ফাঁসির ঘোষণা এসেছিলো।

এখনকার বাচ্চা-বুড়ারাও আর বিবেক বুদ্ধি খরচ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। তারাও পিটিয়ে মেরে ফেলা, কিংবা বিচার না করে ফাঁসি দিয়ে দিতে অতি আগ্রহী।

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি কেন ফাঁসি না, এটা নিয়ে এর আগেও অনেক আলোচনা হয়েছে। এরকম ইস্যুও পুরনো, আলোচনাও।

যদি ধর্ষণের জন্য ফাঁসির শাস্তি হয়, এবং খুনের জন্যেও ফাঁসি হয়, তাহলে সে মেরে ফেলাটাতেই আগ্রহী হবে। এজন্য খুন ছাড়া অন্য দায়ে ফাঁসির বিধান নেই।

একই কাজ করা হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনাতেও।

রুলসটা (মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩) এমন ছিলো যে, দুর্ঘটনায় আহত হলেও ৩ বছরের জেল, নিহত করলেও ৩ বছরের জেল। ফলে চালকরা এক্সিডেন্ট করার পর তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে চাইতো। মানুষ নাই, ঝামেলাও নেই।

এখন ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে সেখানে মৃত্যুর ক্ষেত্রে দেয়া হয়েছে ৫ বছরের জেল, আহত ৩ বছরই আছে।

এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই সবখানে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া যায়না, এসবও মাথায় রাখতে হবে।

February 27, 2025 No comments
বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশন এর হিসাব মতে ২০২২ সালে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে স্কুল ও সমমান পর্যায়ের ৩৪০ জন এবং কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থী ১০৬ জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সে হিসেবে মাসে ৪৪ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করেছেন। 

২০২১ সালে  বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন এবং  ২০২০ সালে ৭৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিলেন।

এবছরের প্রথম ৬ মাসে ২৩৫ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। 

আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, গত বছর আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় একটি অংশ (২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ) এই পথ বেছে নিয়েছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মান-অভিমানের কারণে। ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন অভিমানের করে। এ ছাড়া প্রেমঘটিত কারণে ২৩ দশমিক ৩২ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।


এই তথ্য গুলোতে শুধু শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া ২০১৮ তে একবার দেখেছিলাম দিনে ২৯ জন মানুষ আত্মহত্যা করে মারা যান। ২০২২ এরকম বেশকিছু আত্মহত্যা আলোচনায় এসেছিলো। সেগুলো দেখে আমিও ভাবলাম, এরকম ঘটনাগুলোর একটা আলাদা সংগ্রহ রাখা যায়। 

প্রতিটি মৃত্যুই অনেকগুলো ঘটনার প্রেক্ষিতে আসে, প্রত্যেকেরই আলাদা জীবন, আলাদা সমস্যা, কিন্তু সবার সমাধান একই জায়গায় এসে মিলিত হয়েছে। 

২০২২ এর সেই চিন্তার আলোকে ২০২৩ এর এপ্রিলে আমি এই তালিকার কাজ শুরু করি। এখানে অল্প কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এবং সবাই প্রাপ্ত বয়স্ক। মূলত কিধরণের পরিস্থিতিতে তারা এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, তা জানাই আমার এই প্রতিবেদন তৈরির মূল অনুপ্রেরণা। 

অনেকগুলো ঘটনা বাদ পড়েছে, অনেকগুলোতে সব তথ্য উল্লেখ করতে পারিনি সময়মত না লিখতে পারায়। 

১। মারিয়া রহমান


মার্চ ২৩, ২০২৩

বয়সঃ ২৫বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ৩য় বর্ষের ২য় সেমিস্টারের ছাত্রী ছিলেন মারিয়া। থাকতেন শেখ হাসিনা হলের ৭০৩ নম্বর কক্ষে।


ঠিকানাঃ নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা।
পিতাঃ ফয়েজ উদ্দিন


মৃত্যুঃ মার্চ ৩০, ২০২৩। ঢামেক আই সিউ তে থাকাকালীন।
Last Facebook Post:
I'm Maria Rahman,
17-07673 signing off, From the earth, being a student of Sher-e-Bangla Agricultural University

ঘটনাঃ শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধা দিয়েছিল। গত ২২ মার্চ তিনি একটি আবেদনপত্র নিয়ে শিক্ষকের কাছে যান। কিন্তু তার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। এর জেরেই ২৩ মার্চ মারিয়া ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী হলের গার্ড পাভেল ভূঁইয়া বলেন, সকাল ৯টা  ১০ মিনিটে হঠাৎ শব্দ শুনে গার্ড রুম থেকে বাইরে এসে দেখি এক ছাত্রী নিচে পড়ে আছে। লাফ দেওয়ার সময় কাঁঠাল গাছের ওপর পড়েছিল, ডাল ভেঙে নিয়ে নিচে পড়েছে। যতটুকু দেখেছি, হাত ভেঙে হাড় বের হয়ে গেছে। 

সহপাঠীদের বক্তব্যঃ ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারিয়ার ক্লাসে উপস্থিতি ছিলো ৫০ শতাংশের কম। এ কারণে তিনি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছিলেন না। এছাড়া সে হতাশায় ভুগছিলেন।  কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তার বেশ কয়েকটা সিটি পরীক্ষা বাকি ছিল। শুনেছি অনেক স্যাররা ওই পরীক্ষাগুলো নেবেন না বলেছেন। এছাড়া অসুস্থতার কারণে ক্লাস করতে পারেনি।  গত ২২ মার্চ একটি আবেদন পত্র নিয়ে শিক্ষকের কাছে যান মারিয়া। কিন্তু তার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। হলে বেড়াতে আসা তার মায়ের সঙ্গেও এ নিয়ে আক্ষেপ করেন মারিয়া, কান্নাকাটিও করেন। পরদিন ২৩ মার্চ সকাল ৯টার দিকে মাকে রুমে রেখে তিনি বের হন। এর কিছুক্ষণ পর হলের ছাদ থেকে মারিয়া লাফিয়ে নিচে পড়েন। ক্লাসে উপস্থিতির হার কম, ক্লাস-পরীক্ষা ও  পারিবারিক চাপে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারে বলে  ’

তার ব্যাচের ক্লাস প্রতিনিধি আমান উল্লাহ বলেন, গতকাল ও (আহত শিক্ষার্থী) আমাকে ওর শিট ফটোকপি করার জন্য নিষেধ করেছিল। বিস্তারিত আমি কিছু জানতাম না, তবে তাকে চিন্তিত মনে হচ্ছিল।

এরপর গুরুতর আহত মারিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। 

অনুসিদ্ধান্তঃ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকলে মানসিক চাপ কাজ করে। এই অবস্থায় পরিবারের সাথেও মনোমানলিন্য তৈরি হয়। আর পরিবারের সাথে সামান্য ঝামেলাও অনেক বড় প্রভাব ফেলে। শিক্ষকদের পরীক্ষা দিতে না দেয়া কখনো কাউকে সুইসাইডে প্রভাবিত করার কথা না। পারিবারিকভাবে সমস্যা থাকারা কারণেই স্যারদের কথাগুলো তার কাছে বেশী অপমানজনক হয়ে লেগেছে। সেকারণে স্ব-বধ।




২। আরাফাত রহমান সিয়াম 

তারিখঃ ৩ বা ৪ এপ্রিল রাতের যেকোনো সময়।
বয়সঃ ২৫ বছর 
অবস্থানঃ জাবি মীর মশাররফ হোসেন হলের বি-ব্লকের ১১৫ নাম্বার কক্ষে। 

পরিচয়ঃ গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায়। জাবি-তে তিনি ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ছিলেন। বিভিন্ন লেখকদের ইংরেজিতে লেখা মূল বই তিনি পড়তেন। ডিপার্টমেন্টে দাবা খেলায় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। 

২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হলেও ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সাথে শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। এছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয়ের উপর বিশেষ পরীক্ষা দিতে হত। শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন সিয়াম।
 
কেউ কেউ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কিত থাকার সুযোগ নেই। কারণ তিনি ইতোমধ্যে একটি অনলাইন চাকরিতে ছিলেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শ কেন্দ্রের একাধিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘আরাফাত আমাদের কাছে কখনো চিকিৎসা নিতে এসেছে বলে জানা নেই।

ঘটনাঃ ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ১৯ মিনিটে তিনি ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট দেন। যার শিরোনাম ছিল: অন দ্য ওয়ে টু ইটারনিটি (অন্তিম যাত্রার পথে)। যদিও তাঁর ওই পোস্টে সময় ৩ এপ্রিল ভোর রাত ৪টা ২৫ মিনিট লেখা ছিল। তার পোস্ট পড়া যাবে এই লিংকে ।

পরদিন  এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন তাঁর সহপাঠীরা। পরে তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান তারা। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। 

মরদেহ উদ্ধারের সময় তাঁর পড়ার টেবিলে সাধগুরুর লেখা ‘ডেথঃ অ্যান ইনসাইড স্টোরি’ বইটি পাওয়া যায়। 









অনুসিদ্ধান্তঃ

সাধগুরুর মতবাদ হলো, জীবন অসীম। আর সেই জীবনে প্রবেশের বাঁধা হলো এই জীবন। তাই মৃত্যু যত আগে আসবে, সে তত দ্রুত অসীম জীবনে প্রবেশ করতে পারবে। একইরকম চিত্র আমরা দেখেছি ভারতের বুরারি সুইসাইড ও বাংলাদেশের আদম ধর্ম অনুসারীদের সুইসাইডের ক্ষেত্রে। ধারণা করা হচ্ছে এই ছেলেটিও অসীম জীবনে প্রবেশের সিঁড়ি অতিক্রম করেছে।

৩। তানভীর ফুয়াদ রুমি

তারিখঃ ১৭ মে দুপুরে
বয়সঃ ২৪ বছর  
অবস্থানঃ রুয়েটের লেফটেন্যান্ট সেলিম হলের ৩৫৫ নাম্বার রুমে। 




পরিচয়ঃ বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮ সিরিজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ঘটনাঃ একাডেমিক ফল নিয়ে দুঃশ্চিন্তা ছিলো তার মধ্যে। সর্বশেষ একটি ল্যাব পরীক্ষায় কম মার্ক আসায় তা শিক্ষকে বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেছিলেন। শিক্ষক না করার পর নিজ রুমে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। 

অনুসিদ্ধান্তঃ রুমি লেখক সমাজে পরিচিত মুখ ছিলেন। তার প্রকাশিত বইও রয়েছে। স্বভাবে দৃঢ়চেতা রুমির আত্মহনন সবাইকে অবাক করেছে। বাইরে থেকে একজন মানুষ শক্তরুপে থাকলেও ভেতরে সে ভেঙে চুরমার হয়ে থাকতে পারে। তার সহপাঠী বা সমমনাদের বক্তব্য থেকে একাডমিক কারণ ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায়নি। 

৪। রাকিবুল হোসেন রাফি

তারিখঃ ১৮ মে 
বয়সঃ ২১ বছর  
অবস্থানঃ হাজারীবাগের বাড্ডানগর লেন পানির ট্যাংকের পাশে একটি বাড়ির পঞ্চম তলায়। 


পরিচয়ঃ রাফি বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার ছোট রাফি মা-বাবার সঙ্গে হাজারীবাগের ওই বাসায় থাকতেন।

ঘটনাঃ ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে তার বাসায় গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাফির কক্ষে পুলিশ একটি চিরকুট পায়, সেখানে ‘মা আমাকে মাফ করে দিও’ লেখা রয়েছে। 

অনুসিদ্ধান্তঃ রাফি খুবই মেধাবী একজন মানুষ এবং টিউশনি করিয়ে অনেক টাকা আয় করতেন। তার বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তার একজন বান্ধবীও ছিলো, যাকে সে প্রায়ই দামী উপহার দিতো। হতে পারে বান্ধবীর কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সে এ পথে পা দিয়েছিলো। 

৫। জয়া কুন্ডু 

তারিখঃ ১৯ আগস্ট
বয়সঃ ২৪ বছর  
অবস্থানঃ ঢামেকের ডা. আলিম চৌধুরী ছাত্রীনিবাসের তৃতীয় তলার ৪৫ নম্বর রুমে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে ছিলেন। পরে সহপাঠীরা তাকে দেখতে পেয়ে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 






পরিচয়ঃ জয়া কুন্ডু ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৭৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি খুলনা জেলার ফুলবাড়ী গেইট এলাকার কুয়েট রোডে। তার বাবার নাম তার বাবার নাম গিরিন্দ্রনাথ কু-ু। খুলনা ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে এসএসসি ও খুলনা বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। 

একই সাথে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন মেধাবী শিক্ষার্থী জয়া কুন্ডু (২৪)। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবার। তাই অন্য কোথাও চিন্তা না করে ২০১৮ সালে তিনি ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের নিকট জয়া ছিলেন অনুকরণীয়। তাকে অনুসরণ করেই অনেকে মেডিক্যাল কলেজে এসেছেন বলে জানা যায়।

তার সহপাঠি, কাজিনদের স্ট্যাটাস থেকে জানা যায়- তুমুল হাসি, প্রাণবন্ত কথায় মাতিয়ে রাখতো সে। মেয়েটিকে অনেকেই অনুসরণ করতো, তাঁর ক্ষুরধারা মেধার কাছে নতজানু হতো। যে কিনা অনেকের পাশে থাকতো, হাসিমাখা মুখ নিয়ে সারাক্ষন মাতিয়ে রাখতো। অথচ তার ভেতরে কিনা বেদনার মহাসাগর! এই চাঁদমাখা মুখের আড়ালে, মেঘ লুকিয়ে থাকতো!

ঘটনাঃ  বুধবার (১৬ আগস্ট) জয়া তার রুমমেট লাবনী রায় লাবুর মোবাইলে আই লাভ ইউ লাবু লিখে একটি মেসেজ পাঠান। একই সময় তার মাকেও একটি মেসেজ দেয় জয়া। ম্যাসেজ দেখে সন্দেহ হয় রুমমেট লাবনী রায় লাবুর। দ্রুত তিনি ছুটে যান ছাত্রী নিবাসের তৃতীয় তলার ৪৫ নম্বর রুমে। সেখানে গিয়ে দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে জয়া। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে। সেখানে চিকিৎসকরা জয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হতাশা থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন জয়া। 

জয়া কুন্ডুর বড় ভাই পার্থ কুন্ডু বলেন, আমি নিজেও আমি বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র। আমার বোন বেশ কিছুদিন যাবত ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে কাউন্সিলিংও করানো হয়েছিল। 

বান্ধবী পৃথুলা রায় বলেন, আমি লাবনী ও জয়া কুন্ডু ডা. আলিম চৌধুরী হলের তৃতীয় তলার ৪৫ নম্বর রুমে থাকতাম। আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ২০১৮-২০১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার সকালে লাবণী হল থেকে বের হয়ে যান। এরপর সকাল ১০টার দিকে জয়াকে রুমে রেখে আমিও বের হয়ে যাই। পরে জানতে পারি- জয়া আত্মহত্যা করেছে। জয়া অনেক দিন থেকে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। কিন্তু কী কারণে ডিপ্রেশন, সে বিষয়টি আমরা জানতে পারিনি। 

জয়া ডিপ্রেশনের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্নও হয়েছিলো। তার পরিবার এবং বন্ধুরাও তার প্রতি সাপোর্টিভ ছিলো। তবুও জয়াকে বাঁচানো যায়নি।

অনুসিদ্ধান্তঃ জয়ার সমস্যাটি একটি রোগ বলা যায়। সে ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে আক্রান্ত ছিলো। যে কারণে তার মধ্যে সবসময় ডিপ্রেশন ভর করতো।  

৬। ঋতু কর্মকার নিপা

তারিখঃ ১৯ আগস্ট
বয়সঃ ২৬ বছর  
অবস্থানঃ ঢামেক ছাত্রী হলে সুইসাইডের ঘটনা ঘটে। 



পরিচয়ঃ ঢাবির ২০১৫-১৬ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ঋতু কর্মকার নিপা, বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর বাজারের নিপেন কর্মকারের মেয়ে। মাস্টার্স শেষে ঢাকার রসুলবাগের এক মেসে থেকে বিসিএস ও আমেরিকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।

ঘটনাঃ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে ঋতু ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেয়েদের আবাসিক হলে তার এক বান্ধবীর কাছে যান। তবে সেই বান্ধবী, তখন হলে ছিলেন না। তখন ঋতুকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পান সেখানকার শিক্ষার্থীরা। তার কাছ থেকে জানতে পারেন, বিষপান করেছেন তিনি। তারাই তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসক তাকে স্টোমাক ওয়াশ করানোর পর মেডিসিন বিভাগের ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। ওই রাতেই তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ১৯ আগস্ট দুপুরে তার মৃত্যু হয়। প্যারাকুয়েট জাতীয় অর্থাৎ ঘাসমারার বিষ পান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঋতুর ছোট ভাই বিজয় কুমার কর্মকার জানান, এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। তবে মাস্টার্স শেষ করেও চাকরি ব্যবস্থা না হওয়ায়, মানসিক অবসাদের মধ্যে ছিল ঋতু ।

অনুসিদ্ধান্তঃ গ্রাজুয়েশন শেষ হলে সন্তানের প্রতি বাবা মার অনেক আশা থাকে চাকুরি করে সংসারের হাল ধরবে। ফলে এই সময় সন্তান বাড়তি চাপের মধ্যে থাকে। মেয়ে হলে সেই চাপটা কয়েকগুণ বেশী অনুভূত হয়। চাকুরি প্রত্যাশীরা দিনের পর দিন যখন পরীক্ষা দিয়েও কোথাও চাকরি নিতে পারে না, তখন তারা নিজের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। এজন্য দেখা যায় এডমিশন সময় এবং মাস্টার্সের পর শিক্ষার্থীরা আত্মহননের চেষ্টা বেশী করে থাকে। পারিবারি সাপোর্ট এসময় বেশী জরুরী হয়। 

৭। শেখ মঞ্জুরুল ইসলাম 

তারিখঃ ২১ আগস্ট
বয়সঃ ২৫ বছর  
অবস্থানঃ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ১৬৫ নম্বর কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।


পরিচয়ঃ মঞ্জুরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তার ফুপু (বাবার চাচাতো বোন) মেহেরুন আক্তার বলেন, মঞ্জুরুলরা তিন ভাই এক বোন, বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মেজ ভাই গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশবিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে চাকরি খুঁজছে। মঞ্জুরুল হচ্ছেন তৃতীয়। ছোট ভাই ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। তাদের পরিবার নিম্ন মধ্যবিত্ত, দরিদ্রতার মধ্য দিয়েই তারা বড় হয়েছে।

ঘটনাঃ রুমমেট ইমান উদ্দিন জানান, তিনি সকাল ৯টায় রুম থেকে চলে যান। তখন মঞ্জুর ঘুমিয়ে ছিল। এরপর তিনি আর হলে আসেননি। বিকেল ৫টার দিকে তার রুমমেট ইমান উদ্দিন রুমে প্রবেশের জন্য ধাক্কা দিলে মঞ্জুরের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। আরেক রুমমেট মো. ফরহাদ বলেন, সকাল ৭ টায় লাইব্রেরির উদ্দেশ্যে চলে যাই তারপর আর হলে আসিনি। কী কারণে আত্মহত্যা করেছে বলতে পারছি না। তবে মঞ্জু ভাই সব সময় চুপচাপ থাকতেন। 

পার্শ্ববর্তী ১৬৭ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী হাম্মাদুর রহমান বলেন, ভাই কারো সঙ্গে তেমন মিশতেন না। প্রচুর অর্থ সংকটে ছিলেন। এমনিতে একাকী আর হতাশায় ভুগতেন। ভাই ইয়ার ড্রপ দিয়েছিলেন। তাদের রুম এই সময়ে ফাঁকা থাকে, সবাই লাইব্রেরিতে পড়তে যায়। আর এ সময়ই ঘটনা ঘটে। 

মঞ্জুরুল দুই ইয়ার ড্রপ দিয়েছিল। বিভাগের এক ম্যামের সঙ্গে নিজের হতাশার কথা শেয়ার করেছিল। ম্যাম তাকে মনরোগ বিশেষজ্ঞও দেখিয়েছিলেন। সেই ডাক্তার তাকে কিছু মেডিসিন দিয়েছিলেন। তবে সে কয়েকদিন থেকে সেগুলো খাওয়া বাদ দিয়ে দিয়েছিল।  

অনুসিদ্ধান্তঃ মঞ্জুরুল এর ঘটনা থেকে অনুমান করা যায়, তাকে অর্থনৈতিক সমস্যা গ্রাস করেছে। হতে পারে সে অর্থ আয় করার পেছনে ছুটতে গিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলে, এতে ট্র্যাক থেকে সরে যায়। পরিবার থেকে কোনো চাপ ছিলো কিনা, তা জানা না গেলেও অনুমান করা যায় সেখান থেকে মানসিক সমর্থনের অভাব ছিলো। আর অন্য সব বিষয়ের চেয়েও পরিবার থেকে সমর্থন হারানোটা সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত করে আমাদেরকে। মঞ্জুরুলের ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। 
August 27, 2023 No comments

 


কিছু ফ্যাক্টস যা জানলে আপনি গণ আবেগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন -
১। মার্টিনেজের মূল সফর ভারতে। শতদ্রু দত্ত নামে এক ভারতীয় ক্রীড়া উদ্যোক্তা তাকে ভারত এনেছেন। এর আগে পেলে ও ম্যারাডোনার মতো মহাতারকাকে কলকাতায় এনেছেন তিনি।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা উন্মাদনা দেখে মার্টিনেজ নিজেই বাংলাদেশে একবার ঘুরে যেতে চেয়েছিলেন। তাই শতদ্রু বাংলাদেশে একটা স্পন্সর খুঁজছিলেন যারা আনবে। তবে শর্ত হলো বিমান ভাড়া ও হোটেল ভাড়া দিয়ে শুধু বাংলাদেশ ঘুরিয়ে নিয়ে যাবে। কোনো পাবলিক সেশন রাখা যাবেনা।
নেক্সট ভেঞ্চার এর সিইওর ভাষ্যমতে তেমন কেউ সাড়া না দেয়ায় শেষে নাকি তারাই এই উদ্যোগে রাজী হয়। এতে তারা মার্টিনেজকে অফিসে আনবে, প্রমোশনাল ভিডিও বা ছবি নিবে। এতে তাদের প্রচারণা হবে এবং বাংলাদেশেও আনা হলো।
দেড়মাস ধরে চলা আলোচনার পর ২৬ জুন রাতে তাদের কনফার্ম করা হয় যে সে বাংলাদেশে আসবে। তবে এতে বাংলাদেশের জন্য সময় বরাদ্ধ হয় ১১ ঘন্টা। তার ভাষ্যমতে হাতে থাকা ৫ দিনের মধ্যে তারা তাদের অফিসের জন্য ১ ঘন্টা সময়ের ট্যুর প্ল্যান করে। তাদের সাথে কথা ছিলো ১০ঃ৩০ এর মধ্যে তাদেরকে মার্টিনেজকে ছেড়ে দিতে হবে।
২। ১০.৩০ এর মধ্যে নেক্সট ভেঞ্চার মার্টিনেজের সাথে কাজ শেষ করে তাকে শতদ্রুর হাত তুলে দেয়। এরপর প্রোগ্রাম প্ল্যানে ছিলো শুধু প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ। অন্য কারো সাথে দেখা করার হলে তা ১০.৩০ এর আগেই করতে হতো।
৩। বাংলাদেশ যেহেতু এ সময় সাফ খেলার কথা এবং সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী তাদের ১টার সময় বাংলাদেশে ল্যান্ড করার কথা তাই নেক্সট গ্রুপ ফুটবল দলকে অফিসে নেয়ার পরিকল্পনায় রাখেনি।
৪। বিজনেজ পারপাসে আনা সত্ত্বেও তারা ভেবেছে দু একজনকে মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে রাখা যায়। এক্ষেত্রে তারা নিজেদের কমফোর্ট জোন বা পরিচিত কাউকে রাখার কথা ভেবেছে। নেক্সট ভেঞ্চার টেক কোম্পানি হওয়ায় তারা পলককে দাওয়াত দেয়, আর আর্জেন্টিনা ভক্ত হিসেবে মাশরাফিকে। কেন সাবেক কোনো ফুটবলারকে রাখেনি তা নিয়ে কিছু বলেনি। হয়তো ব্যক্তিগত সখ্যতা নেই কারো সাথে।
তাদের কথা অনুযায়ী নেক্সট ভেঞ্চার ছেড়ে যাওয়ার পর মার্টিনেজ প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যায়। এ ট্যুরে তার দায়িত্ব ছিলো শতদ্রুর উপর। পলকের তৎপরতায় হয়তো এই অংশটা রাখা হয়। নাহলে কোনো কূটনৈতিক ট্যুর ছাড়া একজন প্রধানমন্ত্রী অন্য দেশের ফুটবলারের সাথে দেখা করার মতো প্রটোকল বহির্ভুত কাজ করার কথা না। এসব বাংলাদেশেই হয়।
৫। এই পুরো ট্যুরটা মূলত একটা বিজনেস ট্যুর হয়েছে যেখানে কোম্পানির মার্কেটিং উদ্দেশ্য মূখ্য। মার্টিনেজকে দেখিয়ে নেক্সট গ্রুপে বিশ্বব্যাপী তাদের বিজনেস প্রচারণা চালাবে।
এই ট্যুরে পাবলিকের সামনে আনা বা সাংবাদিক পর্যন্ত নিষেধ ছিলো। পুরো সময় তাকে রাখা হয় কালো গ্লাসের আড়ালে। বোঝাই যায় কলকাতার ট্যুরে মার্টিনেজকে নিয়ে আগ্রহ ধরে রাখার জন্যই ঢাকার ট্যুরে তাকে মানুষের সামনে কিছু বলতে দেয়া হয়নি। এর দায় নেক্সটকে দেয়া যায়না, তারা শুধু মার্কেটিং সেক্টর ভেবে এদেশে নিয়ে এসেছে। আর মার্টিনেজও এই বিষয়টা জেনেই এসেছে। সে হয়তো ভেবেছিলো একবার অন্তত দেশটাতে আসতে পারছে। এরপর আর কখনো এই সুযোগও নাও হতে পারে। আর এরকম দেশগুলো থেকে স্পেশালভাবে আনলে স্বাভাবিকভাবে তখন বড় তারকাদেরকেই শুধু আনা হয়। এসব ভেবেই হয়তো সে এই ট্যুরে রাজী হয়েছে।
৬। জামাল ভূঁইয়া ও জিকো দেশে আসার পর মার্টিনেজের সাথে দেখা করতে বিমান বন্দর যায়। জামালের কথা অনুযায়ী সে মার্টিনেজকে একবার দেখতে চেয়েছে এবং দেখতে পেয়েছেও। তাই তার কোনো আক্ষেপ নেই।
জিকো বললো সে দেখা পেলে টিপস নিতো।
কিন্তু এই দুজনের আচরণ প্রফেশনাল লেভেলে খুবই অপেশাদার হয়েছে যে সেটা তাদের বোঝা উচিৎ ছিলো। তারা কোনো সাধারণ মানুষ না যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেলিব্রেটি দেখবে।
তাদের জন্য শিডিউল না থাকার পরেও তারা সাধারণ মানুষের মতো গেটে দাঁড়িয়ে ভাবতেছে একবার দেখা হলে ধন্য হবে। এর থেকে বোঝা যায়, তাদের নিজেদেরই সেলেব পার্সোনালিটি নেই।
দেখা করার শিডিউল হয়নি যেহেতু, সেখানে আবার যেতে হবে কেন! নেক্সট সিইওর ভাষ্যমতে তাদেরকে জানানো হলে, তারা হয়তো তখনো ব্যবস্থা নিতে পারতো। সেটাও করা হয়নি। বরং এই কাজ করে তারা দুজন বাংলাদেশী সমর্থকদেরকেই লজ্জায় ফেলেছে। যাদের এদেশের মানুষ ভালোবাসে, তাদের উচিৎ ছিলোনা অন্য কাউকে দেখার জন্য নিজেদেরকে সাধারণের লেভেলে নিয়ে আসা। এমনও না যে এক জীবনে আর দেখার সুযোগ হবেনা, বা একবার দেখতে না পেলে তার আত্মা অতৃপ্ত থেকে যাবে। তাদের পুরো আচরণটাই দেশের জন্যই লজ্জার হয়েছে। যারা প্রফেশনালিজম ব্যাপারে জানে, এই কথা তারাই বুঝতে পারবে।
সাধারণ মানুষ বা আর্জেনটাইন ফ্যান, সাংবাদিক কারো জন্যই এই ট্যুরে কিছু ছিলোনা এবং সেটা আগে থেকেই জানা ছিলো। তবুও মানুষ ভালোবাসার টানে গিয়েছে, যদি একবার দেখা যায়। সেটা আবেগ। কিন্তু প্রফেশনাল কাজে আবেগের কিছু নেই। এখানে থাকে শক্ত স্কেজুয়াল আর ডেটলাইন। এগুলো না বুঝলে মানুষ যুগ যুগ ধরে এপেক্সের কাস্টমার হয়েই থাকবে।

https://www.prothomalo.com/sports/football/4hpredwcyv

https://samakal.com/sports/article/2307181356/%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BF


July 04, 2023 No comments


 

১। ইসলামী ব্যাংক প্রিপেইড ডাইনামিক কার্ডঃ 

  • মেয়াদঃ ৩৬ মাস
  • ইনিশিয়াল ডিপোজিট ১০০০ টাকা। এটা কার্ডের মধ্যেই থাকবে। ব্যবহার করা যাবে।
  • একাউন্টে টাকা থাকলে সেটাকে ডলার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। 
  • ইস্যু এবং বার্ষিক কোনো ফি নেই।
  • বিদেশী ট্রাঞ্জেকশানে/ডলার ১% ফি কাটে। ১০০ ডলার খরচ করলে ১ ডলার ফি। 
  • সাথে সাথে কার্ড পাওয়া যায়।
  • ব্যাংকে একাউন্ট থাকার প্রয়োজন নেই।
  • যা লাগেঃ ছবি, এন আইডি, নমিনির ছবি, নমিনির এন আই ডি, ইউটিলিটি বিলের ছবি।
  • রিপ্লেস ফিঃ ৩ বছর পর - ২০০ টাকা।  
  • ক্লোজিং ফি - ১০০
  • পিন রিসেট - ৫০
  • এক ট্রাঞ্জেকশনে ৩০০ ডলার সর্বোচ্চ। দিনে মোট ১২৫০ ডলার। 
  • ব্যালেন্স জানতে হলে এটিএম বুথ থেকে দেখতে হবে, ব্রাঞ্চে গিয়ে ডিটেইলস কস্ট জানতে হবে।
  • কোনো এপ ভিত্তিক সুবিধা নেই। 
২। ইসলামি গোল্ড ডেবিট ডুয়াল কারেন্সি কার্ড
  • ব্যাংক একাউন্ট এর সাথে কানেক্টেড।
  • বাৎসরিক ফিঃ ৬৯০ টাকা।
  • ডেইলি লিমিট ১০০০ ডলার। 
  • এপ ভিত্তিক সব সুবিধা। 

৩। ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রিপেইড 
  • মেয়াদঃ ৫ বছর
  • ফিঃ ৫৭৫ টাকা
  • রিনিউয়াল বা হারানো ফিঃ ৩০০ 
  • এস এম এস ফিঃ ফ্রি
  • বিদেশী ট্রাঞ্জেকশানে/ডলার ১% ফি কাটে। ১০০ ডলার খরচ করলে ১ ডলার ফি। 
  • ইনিশিয়াল ডিপোজিটঃ ৫০০০টাকা। উইথড্র করে নেয়া যাবে।
  • বছরে ৫০০০ ডলার লিমিট। 
৪। EBL MASTERCARD AQUA PREPAID CARD
  • মেয়াদঃ ৩ বছর 
  • ফিঃ ৫৭৫ টাকা
  • রিনিউয়াল বা হারানো ফিঃ ৩০০ 
  • এস এম এস ফিঃ ২০০ প্রতি বছর। 
  • Card Replacement Fee - BDT 500.00 + VAT (15% as of now)
  • PIN Replacement Fee - BDT 500.00 + VAT (15% as of now)
৫। Insta Prepaid Card । Southeast Bank Limited
  • মেয়াদঃ ১ বছর
  • ফিঃ ৫৭৫ টাকা/ প্রতি বছর 
  • রিনিউয়াল বা হারানো ফিঃ ৫৭৫
  • এস এম এস ফিঃ ফ্রি
  • ব্যালেন্স জানতে কল করতে হবে ১৬২০৬
  • বিদেশী ট্রাঞ্জেকশানে/ডলার ১০০০ টাকায় ৬৬ পয়সা ফি। 
  • সিঙ্গেল ট্রাঞ্জেকশন লিমিট ১০০ ডলার।

March 01, 2023 No comments

 


Currently, a very buzzword around us is ChatGPT. This a new addition to the technology world which is based on Artificial Intelligence. 

Open AI is the producer of ChatGPT. OpenAI is an American artificial intelligence (AI) research laboratory consisting of the non-profit OpenAI Incorporated (OpenAI Inc.). OpenAI conducts AI research to promote and develop friendly AI in a way that benefits all humanity.


On other hand, Tech giant Google announced to make of their own AI-based Chatbot Bard AI a few days ago. 

Chat Bot is an AI-based system where a user finds a relevant solution by asking for it. When a user asks a question, the chatbot analyses the data stored in it and shows the perfect solution.


The basic difference between Chatbot and a Search engine is, search engines use surface web data to show the result, but a chatbot uses data stored in its database. For this, search engines always show various related information to the question. but chatbots give limited answers. 

We know google as a search engine. Google is the market leader in the search engine sector. 


ChatGPT's success already attracts Microsoft. They make a billion-dollar investment in the OpenAI project for the third phase and include ChaGPT in their search engine Bing. By these now bing will show results in association with AI.


Alphabet Inc, the parent company of Google, announced on Monday that it will create a chatbot service and more artificial intelligence for its search engine as well as developers, in response to Microsoft Corp MSFT.O's rivalry to lead a new wave of computing.


So this is now going to be an AI war between Google and Microsoft.

In other news, Baidu Inc. of China announced on Tuesday that it would complete internal testing of a ChatGPT-style project called "Ernie Bot" in March, joining a worldwide competition as interest in generative artificial intelligence (AI) grows.


Let's look at the distinctions between Google Bard AI and Chat GPT.

  • Bard will gather information from online sources and data that are already accessible. Bard will have access to the most recent information and be able to deliver more up-to-date information, whereas Chat GPT's knowledge is restricted to events through 2021.
  • Bard will have an advantage against Chat GPT, which is supported by Microsoft because it will have access to a wealth of data and be coupled with Google's search engine.
  • Google's Bard AI is supposed to give users more accurate information compared to Chat GPT, which has a tendency to invent facts and embellish stories. Bard AI has an advantage over other AI platforms like Chat GPT in terms of the depth and breadth of its data because of Google's enormous data collection.

Google is strengthening its service, while Microsoft is doing the same for Bing by integrating OpenAI's capabilities into it. 

LaMDA, Google's artificial intelligence, is the brains behind the new chatbot. LaMDA produced language with such competence that a corporate engineer last year referred to it as sentient, a claim that the tech giant and scientists universally rejected.


In a demonstration of the service, Bard allows users to give it a prompt but warns that its response may be improper or wrong, just like its rival chatbot. The demo revealed that it then provided three bulleted responses to a question regarding the findings of a space telescope.


In order to serve more people and improve based on their comments, Google is using a version of LaMDA that uses less processing power. 

ChatGPT already cross some milestones like explosive growth, with UBS analysts reporting it had 57 million unique visitors in December outpacing potentially TikTok in adoption.


Additionally, starting the next month, Google intends to provide businesses and creators with technology tools, initially powered by LaMDA and eventually by other AI.


So, though currently, ChatGPT is ahead in the race but it is hard to guess if google taking the lead in AI bot sectors also. 

February 09, 2023 No comments

 

cormorants - Michael Steverson


হাওয়া সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলো বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

তাদের অভিযোগের বিষয় ছিলো - জেলেরা নৌকায় একটি পাখি পোষে। যদি কোনো কারণে তারা দিক হারিয়ে ফেলে, তাহলে পাখিটিকে ছেড়ে দেয়। পাখি যদি নৌকায় ফিরে না আসে, তাহলে বুঝতে হবে আশেপাশে কোথাও ভূমি আছে। কিন্তু আবার যদি ফিরে আসে, তাহলে বোঝা যায় কোনো আশ্রয় নেই।

এই প্রাকৃতিক চিহ্ন ব্যবহার করে জেলেরা নদীতে আশ্রয় খোঁজে। উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া পাওয়ার আগে এভাবে প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে কাজ সারা হতো।

এদিকে ১হাজার বছর আগে চীনের জেলেদের মধ্যে একটা প্রচলন ছিলো করমোরেন্ট পাখি ব্যবহার করে মাছ শিকারের। করমোরেন্ট এক ধরণের উপকূলীয় পাখি, যারা আগ্রাসী ক্ষিধার জন্য পরিচিত ছিলো। এই স্বভাবের কারণে জেলেরা করমোরেন্ট পাখির গলায় একটা ফাঁদ বেঁধে দিতো, যাতে সে বড় মাছ খেতে না পারে। মাছ মুখে আটকিয়ে পাখি নৌকায় আসতো। এবং জেলেরা সেটা নিয়ে নিতো।

পাখির মাধ্যমে চিহ্ন নিয়ে মাছ ধরার আরেকটা পরিচিত উপায় হলো, যখন কোথাও পাখির ঝাঁক পানির কাছাকাছি উড়ে, বিশেষ করে সী গাল, বুঝতে হবে সেখানে প্রচুর ছোটো মাছ উপরের স্তরে আছে। নিচে শিকারী মাছ তাড়া করার কারণে ছোটো মাছগুলো উপরে চলে আসে, ওই জায়গায় ওসময় জাল বসালে ভালো মাছ পাওয়া যেতে পারে। 


যাহোক, বন বিভাগের অভিযোগের মূল কারণ ছিলো, এই সিনেমা দেখে মানুষজন পাখি ধরে ধরে খাঁচায় ভরে নদীতে নিয়ে যাবে এবং খাবারে টান পড়লে পাখি জবাই করে খেয়ে ফেলবে, এতে পাখির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট হবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা মামলা তুলে নিয়েছে। 

October 16, 2022 No comments
মাফিয়াতন্ত্র, পুলিশি রাষ্ট্র বা আমলা তন্ত্র, যে যাই বলুক - আমার কাছে মনে হচ্ছে আমরা উপনিবেশিক আমলে আছি।

ব্রিটিশ আমলে পুলিশ হাফ প্যান্ট পরে হাতে লাঠি নিয়ে ঘুরতো। অফিসার মোটর গাড়িতে থাকতো, সাথে কেউ ঘোড়ায় চড়ে বা কেউ দৌড়ে সাথে সাথে থাকতো।

পথে ইচ্ছে হলেই কাউকে চাবুক দিয়ে মারতো, কাউকে লাঠি দিয়ে।

বিভিন্ন জায়গার অবস্থা দেখুন। সালথায় এসি ল্যান্ডের সহকারী গাড়ি থেকে নেমেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কোমর ভেঙে দিয়েছে, নারায়ণগঞ্জেও ওরকম কিছু হয়েছে শুনলাম। আজকে ঢাকায় বাইকারদের লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে।

আর রিকশাচালকদেরকে পেটানোতো প্রতিদিনকার ঘটনা। 

এখানে দুটো ব্যাপার প্রতিবাদ করার মতো ঘটেছে। প্রথমত কেউ কারো গায়ে আঘাত করতে পারেনা। পুলিশের কার্যবিধি নির্দিষ্ট করা আছে। কেউ আইন না মানলে তাকে জরিমানা করবে, মোবাইল কোর্ট জেল দিবে, ক্ষেত্র বিশেষে আদালতে মামলা হবে। কিন্তু কখনো কারো গায়ে হাত তোলা যাবেনা।

২য় ব্যাপার হলো, করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো দুরত্ব বজায় রাখা বা একক পরিবহণ ব্যবহার করা, যেখানে অন্যদের সংস্পর্শে আসবেনা। সেদিক দিয়ে বাইক, রিকশা, প্রাইভেট কার সবচেয়ে উপযোগী বাহন। কিন্তু সরকার বাইক রাইডিং বন্ধ করে দিয়েছে। যারা বাইক চালাচ্ছিলো তাদের উপর চালিয়ে পুলিশি নির্যাতন।
অনেকগুলো রিকশা রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। 

মোট কথা, এদের পরিচালনা করে কারা, উপদেষ্টা কারা বা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্যানেল এর সদস্য কে কে? যদিও এদের সবার প্রধান একজনই, তার ইশারা ছাড়া কোনো পাতা লড়েনা।

ভালো ব্যাপার হলো, মানুষ এখন প্রতিবাদী হচ্ছে, নিজের অধিকার সচেতন হচ্ছে। সালথায় গায়ে হাত তোলার প্রতিবাদে প্রশাসনের উপর হামলা করেছে, নারায়ণগঞ্জে, মুন্সিগঞ্জে প্রতিবাদ হয়েছে, আমার এলাকায়ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে মানুষ।

সিলেটে দেখলাম পুলিশ মেশিনগান আর গুলি নিয়ে বাংকারে বসে আছে। 

সব জায়গায় মানুষ ক্ষেপে আছে, সবাই একত্রিত হয়ে একদিন রাস্তায় নামলেই হয়ে যাবে বিপ্লব।
April 08, 2021 No comments
1. Chrome Not Running:
first go to terminal and type
gedit /etc/chromium.d/default-flags export
than. paste below the page and save
 CHROMIUM_FLAGS="$CHROMIUM_FLAGS --password-store=detect --no-sandbox --user-data-dir"
Link
November 24, 2019 No comments
The Sixth Sens মুভিতে একটা বাচ্চার গল্প দেখানো হয়, যার সিক্সথ সেন্স খুব ভালো কাজ করে অথবা সে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ।

এই ছেলের একটা গুরত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল, সে মৃত মানুষদের হাঁটাচলা করতে দেখতে পায় এবং তারা তার কাছে সাহায্য চায়। তার ভাষ্যমতে সবাই তাদের দেখতে পায় না এবং তাদের পছন্দমত লোকেরাই তাদের দেখতে পারে।


বাসায় প্রায়শই রাতে মৃত আত্মারা তার কাছে আসতো এবং কথা বলতে চাইতো। এদের থেকে দূরে থাকতে সে নিজ বেডরুমের এক কোণায় কাপড় দিয়ে একটা তাবুর মতো বানায় এবং সেখানে শুধুমাত্র যিশুর মূর্তি রাখে। ( এ কাজটা আমিও করতাম এবং নিজেকে লুকিয়ে ভাবতাম কেউ আমাকে দেখছে না 😁)তার বিশ্বাস যিশুই শুধু তাকে ওদের হাতে থেকে রক্ষা করতে পারে। যখনি সে ভয় পায় বা অস্বাভাবিক কিছু দেখে, তখনি সে এই ছোট্ট তাবুর ভেতরে চলে আসে। এটা তার একটা আস্থার জায়গা, যেখানে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারেনা।


আমাদের প্রায় সবারি (অথবা কয়েকজনের) মনের মধ্যেও এরকম একটা স্পেশাল জায়গা আছে। বাচ্চাটার বেডরুম কে যদি আমাদের মনের জগত বলি তাহলে তার ভেতরে আরো একটি গোপন জায়গা থাকে, যাকে আমি তুলনা করছি ঐ তাবুটার সাথে। মনে অনেকের আনাগোনা থাকলেও ঐ জায়গা খুবই নির্দিষ্ট। হতে পারে একজন বা দুজন এই জায়াগায় প্রবেশের সুযোগ পায়।

 কিন্তু যে এই স্থান অর্জন করে নেয়, সে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যায়। শত চেষ্টাতেও তার স্থানচ্যুতি সম্ভব না। সেই মানুষ্টা হয় তার সবচেয়ে আস্থার জায়গা। যেকোনো সমস্যা বা সংশয়ে সে আগে এই মানুষ্টার কাছে ছুটে যাবে। যেকোনো কাজ এর সাথে শেয়ার করবে। সবকিছুতেই তার একটা অলিখিত ভাগ থাকবে।

এমনও হয়, মনের অগোচরে তার সাথে কথা হবে, সবসময় সে না থাকলেও মনে হবে আমার একজন আছে। তার অবস্থানকে বলে যায় মনের মণিকোঠায়! 

সে জায়াগাটার দরজা সবসময় বন্ধ থাকে ।


এরকম আরো একটা দরজার কথা সম্ভবত লালন বলেছেন তার গানে। আট কুঠুরি নয় দরজা। একই নামে সমরেশ মজুমদারের একটি বইও আছে।


আট কুঠুরি মানুষের শরীরের আটটা ক্যাভিটি বা ভেসেল। মাথার খুলি, ডান-বাম দুই ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলী, দুই কিডনি আর কোলন। আর এই আটটির সঙ্গে শরীরের নয়টি দ্বার যুক্ত। তিনতলা হল, মস্তিস্ক, কোমর থেকে শরীরের ঊর্ধ্বভাগ এবং নিম্নভাগ। নয় দরজা মানুষের শরীরের নয়টা এনট্রান্স বা এক্সিট - দুই চোখ, দুই নাকের ফুটো, মুখ, দুই কানের ফুটো, আর বাকি দুইটা জননাঙ্গ ও পায়ু।


মনের সেই ছোট্ট কুঠুরির মধ্যের মানুষটা যদি হারিয়ে যায়, তবুও বাকী ৮ কুঠুরি আপনাকে হয়ত বাঁচিয়ে রাখবে, কিন্তু ৯ দরজার বাইরেও যে দরজাটা আছে, সেটা বন্ধ থেকে যাবে।


Easy to enter,
Difficult to erase!
November 11, 2018 No comments

ফেসবুক এখন প্রতি ৪টি পোস্ট পর বিজ্ঞাপন দেখায়। আগে এতটা ছিলোনা।

বাংলাদেশে যখন ফেসবুক আসে, তখন খুব কম সংখ্যক মানুষ ব্যবহার করতো। আর মূল দেশের বাইরে হওয়ায় এদেশে তথা উপমহাদেশের মানুষদের নিয়ে ব্যবসা করা তাদের জন্য সহজ কাজ ছিলোনা।

এখানে ব্যবসা করতে হলে তাদের ধীর কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা করতে হত।

সেজন্য তারা নিয়ে এলো ইন্টারনেট ফর অল। ফ্রিতে ইন্টারনেট ব্রাউজিং।

এই সার্ভিস এর কারণে উপমহাদেশীয় নিজের খেয়ে পরের মোষ তাড়ানো এবং নিজের সম্পর্কে উদাসীন মানুষদের একইকাতারে নিয়ে আসা সহজ হল। ফলে ট্রেন্ড ফলো করতে বা অন্যদের সাথে কানেক্টেড থাকতে, যেকারণেই হোক সবার একটা করে ফেসবুক একাউন্ট হয়ে গেলো। এবং ব্যপারটা এমনভাবে করা হল যাতে মোটের উপর মনে হয় সবাই ফ্রি সার্ভিস পাচ্ছি এবং নিজের কাজ হয়ে যাচ্ছে। তাদের লাভ হলেও তাতে আমার কী?

অবস্থা এমন হল যে এখন ফেসবুক একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক হয়ে গেলো। ফেসবুক এখন ৬ষ্ঠ মৌলিক চাহিদা হয়ে গেলো। ভার্সিটির ক্লাস শিডিউল, কোচিং এর ক্লাস, অফিস কন্টাক্টও এখন ফেসবুক নির্ভর। একদিন ফেসবুকে না গেলে আপনার ক্লাস মিস হয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে বেশীরভাগ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করায় কোম্পানিগুলোও বাধ্য হয়ে ফেসবুক কে তাদের মার্কেট প্লেস হিসেবে নিতে শুরু করলো। বেশী ইউজার হওয়ায় এখানে বিজ্ঞাপন দেয়া বেশী লাভজনক। তাছাড়া এখানে দ্রুত পরিচিত হবার চান্সও বেশী। ফলে সবার টার্গেট ফেসবুক মার্কেটিং।

প্রথমদিকে একটি দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত এখন ফেসবুককে করেছে সবচেয়ে বড় অনলাইন প্ল্যাটফরম হিসেবে।

অন্যদেশের সাথে উপমহাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় পার্থক্য, ওরা চাইলে যেকোনো সাইটে চলে যেতে পারে, কিন্তু এখানকার মানুষ এতটাই ফেসবুক নির্ভর যে, তারা মূলত ইন্টারনেট বলতে ফেসবুক বোঝে। এবং এরা ইমেইল করতে শেখার আগে ফেসবুকে ইভটিজিং করা শেখে। যেকারণে দেখা যায় এডমিশন টাইমে ফেসবুকের গ্রুপ গুলোতে প্রশ্ন দেখা যায়- ভাইয়া আমাকে ওমুক ভার্সিটির লিংক দেন!

ফ্রিতে খাবার দিয়ে তার থেকে সবচেয়ে বড় মূনাফা আদায় করে নেয়ার সফল উদাহরণ ফেসবুক।

অন্যদেশের মানুষ যখন ডাটা চুরির পর ফেসবুক ছাড়ছে, তখন দেখবেন এদেশের মানুষ বলে আমার ডাটা দিয়ে ফেসবুক কী করবে? ঘুরাঘুরি, চেক ইন আর সেলফি আপলোড করা ছাড়া ফেসবুকে আমার কিছু নেই। এই যাদের সিকিউরিটি সেন্স, তাদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায়?

ফেসবুক সহ অনলাইন কোম্পানিগুলোর মূল শক্তি ডাটা। ডাটা মানে আপনার প্রতিদিনের কাজের হিসেব। আপনি কী করেন, কখন ঘুমান, ঘুম থেকে উঠেন, কী ধরণের খাবার খান, কোথায় ঘুরতে যান, কোন সময় কীরকম ড্রেস পরেন - এসবই।

আপনার এই সামান্য ডাটাগুলো দিয়েই অনেক বড় কাজ করে ফেলা সম্ভব, তা কি ভেবেছেন?

উদ্ভাস এর উদাহরণ দিই। উদ্ভাস যখন ভর্তি নেয়, তখন আপনার কিছু ডাটা রাখে। এগুলা সবাইই রাখে। জন্মতারিখ, বাসা কোথায়, কোথায় পড়েন এসব।

প্রতিবার আপনার জন্মদিন কেউ মনে না রাখলেও উদ্ভাস আপনাকে ঠিকই শুভেচ্ছা জানাবে। ঘুমত থেকে উঠে যখন জন্মদিনের মেসেজ দেখবেন, তখন মনের অজান্তেই তাদের প্রতি একটা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ফেলবেন। এটাই ডাটার শক্তি। উদ্ভাস আপনার টাকা চায়নি। কিন্তু আপনি তাদের নাম উচ্চারণ করেছেন, এটাই তাদের অর্জন। এরপর কাউকে উদ্ভাস সম্পর্কে বলতে আপনি অবশ্যই পজিটিভ কিছু বলবেন। এটাই তাদের ব্যবসা প্রসার ঘটাবে।

আরেকটু বড় করি ব্যাপারটা। রকমারি ডট কম উদ্ভাসের প্রতিষ্ঠান। উদ্ভাসে যারা কোচিং করে তারা আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম জানে- অন্যরকম গ্রুপ, পাই ল্যাবস, টেক শহর, অন্যরকম বিজ্ঞানবক্স ইত্যাদি। এই নাম গুলো তাদের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যরা খুব বেশী জানেনা। এই যে এতগুলো ছেলে কোচিং করে, তাদের সবার কাছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন হয়ে গেলো।

এটা দেশীয় উদাহরণ।

একই কাজ করে ফেসবুক, গুগল, ইয়াহু সহ অন্যরা- যারা শুধু অনলাইনেই বিদ্যমান।

ফেসবুক আপনার ডাটাগুলো নিয়ে বিশাল ডাটাবেজ সাজিয়ে রেখেছে। সেখানে আপনার প্রতিটা ডাটা অনুযায়ী আপনাকে আলাদা ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। আর এই কাজটা যে সিস্টেম করেছে, তার নাম হল মেশিন লার্নিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। 

সেগুলো নিয়ে পরে বলবো।

একই কাজ করে গুগল, ইয়াহু সহ অন্যরা। গুগলের মূল কাজ ছিলো সার্চ সেবা দেয়া। এতে তাদের আয় নেই। বরং তাদের আয় হল আপনি কী ধরণের জিনিষ সার্চ করেন, সে অনুযায়ী আপনার সামনে বিজ্ঞাপন হাজির করা।
গুগল সার্চের পরে আসে এডওয়ার্ড। আপনি যতগুলো ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন এবং সেগুলো যদি গুগল এডওয়ার্ডে রেজিসট্রেশন করা থাকে, তাহলে যে সাইটেই যান না কেন, গুগল তাদের বিজ্ঞাপন আপনার সামনে ঝুলিয়ে দিবে।

ফেসবুক এই কাজটা শুধু ফেসবুকে করে, কিন্তু গুগল করে পুরো ইন্টারনেট জগতে। বুঝেন অবস্থা!

অন্যদিকে উবারও আছে একইরকম কাজ নিয়ে। তাদের যেহেতু ওয়েবসাইটে কাজ নেই, তারা চেক করবে আপনার ফোন। ফোন দিয়ে আপনি কোন সাইট ভিজিট করেন, কখন কোথায় যান, যেতে কতক্ষণ লাগে এসব জানা তাদের দরকার। সে অনুয়ায়ী তারা আপনার আশে পাশে উবার এর ব্যবস্থা রাখবে।

মাইক্রোসফটের অবশ্য এসব জেনে কাজ নেই, তাদের কাজ প্রোডাক্ট বিক্রি করা। তাই প্রোডাক্ট এর আপগ্রেড এর জন্য তারা শুধু আপনার পিসির কনফিগারেশন চেক করে।

এখন জানা যাক, এসব ডাটা নেয়া আপনার জন্য কতটা ক্ষতিকর বা তাদের জন্য কতটা লাভজনক।
আপনার কাজের ডাটা নেয়া খুব একটা ক্ষতিকর বলে আমার মনে হয়না, বরং এতে আপনি সহজে সার্ভিস পাবার সুযোগ বাড়ে। কিন্তু সমস্যা হল তখনি, যখন সেই ডাটা নেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কারো হাতে চলে যাবে। অর্থাৎ চুরি হবে।

চুরি হলে কী হবে?
চুরি হলে আপনার ডাটা দিয়ে অন্য কেউ আপনাকে হেনস্থা করতে পারবে সহজেই।
যেমন ধরুণ, আমি একটা মেয়েকে পছন্দ করি। যে রাজী হচ্ছে না। আমার ইচ্ছা তাকে তুলে আনবো। এখন আমি ফেসবুক এবং গুগলের সহায়তায় তার বিগত কয়েকদিনের ডাটা নিলাম। সে কখন কোথায় যায়, কিরকম গাড়ি ব্যবহার করে, বা ঘুরতে যায় কোথায় সে অনুযায়ী আমি প্ল্যান করে তাকে তুলে নিয়ে আসলাম। (উদাহরণ দিলাম আরকি, আমি এতটা খারাপ না !) 
এবং এই কাজটা যে কেউ করতে পারে। এবং তার চিন্তা নিশ্চয় শুধু তুলে নেয়া হবেনা! সে আপনাকে কিডন্যাপ করে বড় অংক দাবী করবে। আপনার সিক্রেট বিজনেস ডিল ফাস করবে। অথবা প্রতিপক্ষের কাছে বিক্রি করে দিবে। আপনার কোনো সিক্রেট ছবি ফাস করেও আপনার ইমেজ নষ্ট করে দিবে।

এটা হল শুধু নরমাল ডাটা।
যদি আপনার ব্যাংক একাউন্টের খবর সে জানে, আপনার ক্রেডিট কার্ড নম্বর সহ অন্যান্য সব কিছুই তখন থাকবে বিপদে। ভাবতে পারেন? কতটা ভয়ানক! 

আর যদি চুরি নাও হয়, তাহলে কি হবে? কোম্পানি এসব দিয়ে কী করবে? 
কোম্পানি আপনার জন্য তাদের পণ্য সাজাবে। এটা আক্ষরিক অর্থে ক্ষতিকর না হলেও আপনার প্রাইভেসির জন্য খুবই ক্ষতিকর। আপনার সম্পূর্ণ চিন্তা তখন তারা চিন্তা করতে পারবে। এমন হবে যে আপনি কি করবেন না করবেন তা সম্পূর্ণ তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। আপনা যখন যা দরকার, তার জন্য তারাই আপনাকে সাজেশন দিবে, আপনার চিন্তা শক্তিটা কাজ করার অপশন বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের পণ্যের জগতে আপনি ডুবে থাকবেন।

আর এই কাজটা করার জন্য এশিয়া হল সবচেয়ে উপযোগী জায়গা। কারণ ইউরোপে সিকিউরিটি আইন অত্যান্ত কড়া। আপনি কোন কাস্টমারের কোনো তথ্য নিতে তার জন্য যথেষ্ট কারণ দেখাতে হবে। কোনো নড়চড় হলেই জরিমানা। এবং আপনাকে ভয়াবহ শাস্তি পেতে হবে। 

আগের একটা লেখায় লিখেছিলাম কেন এ আই তে চীন আমেরিকার চেয়ে এগিয়ে থাকবে। কারণ চীনের মানুষের ডাটা নিয়ে ভাবনা নেই। তাই সহজেই তাদের ডাটা নিয়ে ব্যবহার করা যায়। যে কাজটা ইউরোপ এ পারবেন না। আর এ আই হল আপনার ডাটা দিয়ে আপনার জন্য কাজ করা। আপনি কখন কি করবেন না করবেন তা বের করাই হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কাজ। 

এখন আসি পাঠাও প্রসঙ্গে। 

পাঠাও যা করেছে তা হল, আপনার ফোনে যা আছে তার সবকিছু নেয়া। অন্যরাও এসব করে তবে তার জন্য কারণ বলে নেয়। কিন্তু পাঠাও কোনো কারণ না দেখিয়েই কাস্টমারের ডাটার উপর বেমালুম হস্তক্ষেপ চালিয়ে। 

ফোনের সব কনভার্সেশন থেকে শুরু করে কন্টাক্ট লিস্ট এবং আপনার সব এপের ডাটাও তাদের কাছে আছে। 

পার্থক্য অনুমতি নেয়া তে। যদিও খুব কম বাংলাদেশীই সিকিউরিটি সম্পর্কে অবগত এবং এপের টার্মস এন্ড কন্ডিশন পড়ে দেখে। তাই এসব অনুমতি চাইলেও বেশীরভাগ হ্যা করে দেয়।

এর আগে গুগল নিয়ে কথা উঠলেও তা সহজেই ধামাচাপা পড়ে যায়। কারণ আমরা এসব নিয়ে ভাবী না। তবে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইনে এসব নিয়ে নির্দেশনা আসছে। শাস্তির বিধান থাকছে। বাংলাদেশি কাস্টমারদের কী কী ডাটা চাওয়া যাবে তার নির্দেশনা দেয়া থাকবে। 

আসলে অনলাইন জগতে কেউই নিরাপদ না। আপনার প্রতিটি ডাটা কেউ না কেউ নজরদারী করছে এবং সেভাবে আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। 

তবে আপনি চাইলে তাদেরকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, আপনার অনলাইন জগত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।

যদি ফেসবুকের কথাই ধরি- আপনি যদি ফেসবুকে সবকিছু শেয়ার না করেন, তাহলে অনেকাংশে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারেন।

কিছু পরামর্শ- 
১। নিজের আইডিতে নাম পরিচয় ছাড়া গোপন কিছু রাখবেন না। বাসার ঠিকানা, বাবা মা, সন্তান সহ অন্যদের পরিচয় আড়ালে রাখুন। শুধু যেটুকুতে আপনি মানুষ হিসেবে অস্তিত্ব আছে বোঝায় ওতটুকু।

২। জন্মদিন এবং বন্ধু তালিকা হাইড করে রাখুন। চাইলে ফেসবুক লক সিস্টেম ব্যবহার করে বন্ধু তালিকার বাইরের মানুষের কাছে আপনার পুরো প্রোফাইল হাইড করতে পারেন।

৩। ছবিগুলোতে গার্ড লক ব্যবহার করবেন। মেয়েদের ছবি ফেসবুকে খুব বেশী না দেয়াই ভালো।

৪। ফিশিং লিংক বা অপরিচিত কোনো সংবাদ লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকবেন। ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার করতে পারেন।

৫। ফেসবুক কে নিজেকে প্রকাশ করার পরিবর্তে শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রাখার চেষ্টা করুন। নিজের পার্সোনাল এবং সিক্রেট কোনোকিছু শেয়ার করবেন না। 

এগুলো প্রাইমারি লেভেলের কাজ। এ থেকে আপনার আইডি হ্যাক হলেও রিস্ক কম থাকে। আর ডাটা কম থাকলে হ্যাক হবার রিস্ক কম। 

আর ফেসবুক কাজ করে আপনার কার্যক্রম এর মাধ্যমে। আপনি যদি সবসময় ইঞ্জিনিয়ারস ডায়েরির পোস্ট লাইক দেন, তাহলে সেরকম পোস্টই সামনে আসবে, আর যদি সার্কাজম এর পোস্ট লাইক দেন, তাহলে সারাদিন ট্রল পোস্ট আপনার সামনে ঘুরতে থাকবে। আর এ ভিত্তিতেই ফেসবুকে আপনাকে বিজ্ঞাপন দেখাবে। 

নিজের মতো অনলাইন জগত সাজাতে ফেসবুকে ফলো লিস্টেও শুধুমাত্র আপনার মতো মানুষদের রাখুন। আপনার ফ্রেন্ড যদি ট্রল পোস্ট এ লাইক দেয় তাহলে তা আপনার সামনেও আসবে। তাই অপছন্দের কাজ করে এরকমদের আনফলো করুন। 

আজ এ পর্যন্তই। পাঠাওকে চাইলে ফোন থেকে রিসাইকেল বিনে পাঠিয়ে দিতেই পারেন। কিন্তু অন্য যারা একাজ করে তাদেরকেও পাঠাতে হবে। 
এরচেয়ে ভালো হয় আনস্টল করে আবার ইন্সটল করুন এবং কন্ডিশন এ ক্লিক করার আগে অনুমতি দেয়ার বিষয় গুলোতে টিক চিহ্ন তুলে দিন। 

ধন্যবাদ! 

দুঘন্টা টাইপ করে আমি এখন খেতে গেলাম 


Muhammod Mahdi Hasan Saikot
Civil Engineering Department
Faridpur Engineering College


November 10, 2018 No comments

ট্যাক্সিডার্মি'র নাম শুনেছেন নিশ্চয়।
মৃত প্রাণীর চামড়া ব্যাবহার করে বিশেষ কৌশলে তার মধ্যে জীবন্ত রূপ ফুটিয়ে তোলাই হচ্ছে ট্যাক্সিডার্মি।
বিজ্ঞান ও শিল্পের এক স্বপ্নময় যুগলবন্দী হল ট্যাক্সিডার্মি।

বাংলাদেশের মানুষ এ ধরণের ব্যাপার সাধারণৎ হলিউডের সিনেমাতেই দেখে থাকে।
কেননা, শুধুমাত্র পৃথিবীর বিখ্যাত সব হিস্ট্রি মিউজিয়ামে( লন্ডন, বার্লিন, ওয়াশিংটন প্রভৃতি) প্রাণীদের এ ধরণের শিল্পময় উপস্থাপন দেখতে পাওয়া যায়।

এই কাজটা মোটেও সহজ নয়। দক্ষ ও নিপুণ ট্যাক্সিডার্মিস হতে গেলে ধৈর্য, একাগ্রতা ও প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে সৃজনশীল শৈল্পিক মনের অধিকারী হতে হয়।

আর সম্প্রতি এই গুণগুলোর এক অসাধারণ অভিপ্রকাশ ঘটেছে দুই বাংলাদেশী আমিনুল ও রায়হান এর মধ্যে। ২০১৬ এর ৫-৯ এপ্রিল জার্মানির বার্লিন শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ট্যাক্সিডার্মি কনফারেন্স-২০১৬ উপলক্ষে বাংলাদেশের এই সাফল্যটি এসেছে। বাংলাদেশের দুই তরুণ আমিনুল ও রায়হান চারটি ক্যাটাগরিতে মোট পাঁচটি পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। তার মধ্যে আমিনুল একাই জিতেছেন দুটি প্রথম ও দুটি দ্বিতীয় পুরস্কার। রায়হান জিতেছেন একটি দ্বিতীয় পুরস্কার। আর এ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পেল দু'জন আন্তর্জাতিক মানের ট্যাক্সিডার্মিস্ট। ট্যাক্সিডার্মির জগতে বাংলাদেশও এখন অনন্য এক উচ্চতায়।
জার্মান ট্যাক্সিডার্মি সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। এই প্রতিযোগিতার জন্য কয়েক মাস আগে আয়োজকরা প্রতিযোগিতার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে কয়েকটি প্রাণীর প্রজাতি নির্ধারণ করে। বিশ্বের অন্যান্য প্রতিযোগীর মতো বাংলাদেশের রায়হান ও আমিনুলও সেই চ্যালেঞ্জিং প্রাণী প্রজাতির ট্যাক্সিডার্মি শুরু করেন এবং তাদের সেই তৈরিকৃত প্রাণীগুলো নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। দু'জনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে পাস করে বের হয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে জার্মানির অ্যাফোর্ট শহরে অবস্থিত ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে বিখ্যাত ট্যাক্সিডার্মিস্ট মার্কো ফিশারের তত্ত্বাবধানে ইউরোপের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানে ট্যাক্সিডার্মির বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন আমিনুল ও রায়হান।

এর আগে ২০১৪ সালে (২২-২৭ এপ্রিল) ইতালিতে অনুষ্ঠিত 'ইউরোপিয়ান ট্যাক্সিডার্মি চ্যাম্পিয়নশিপ' প্রতিযোগিতায় এই তরুণদ্বয় যুগ্মভাবে ইউরোপের সব প্রতিযোগীকে হারিয়ে দিয়ে 'বেস্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড' শাখায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

'ইউরোপিয়ান ট্যাক্সিডার্মি চ্যাম্পিয়নশিপ'_ এ ধরনের একটি প্রতিযোগিতা যা সাধারণত চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়। এবারে এই প্রতিযোগিতা ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রোমানদের স্মৃতিবিজড়িত এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্বাক্ষরবাহী লংগরন শহরে গত এপ্রিল মাসে (২২-২৭) অনুষ্ঠিত হয়। ইউরোপের পনেরোটি দেশ থেকে প্রায় ১০০ প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

বিশ্বে ১০০ বছর ধরে ট্যাক্সিডার্মির কাজ চললেও বাংলাদেশে তা মাত্র ৬-৭ বছর। আর এই অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দু'বার অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করল।

বিশ্বে অনেকগুলো ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম থাকলেও বাংলাদেশে একটিও নেই। তবে আশার কথা, ঢাকাতে একটি হিস্ট্রি মিউজিয়াম নির্মানের কাজ চলছে। এরপর প্রতিটি বিভাগেই একটি করে মিউজিয়াম করার পরিকল্পনা রয়েছে ।

বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়মে কিংবা ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন প্রভৃতি কারণে নানা ধরনের অসংখ্য প্রাণী মারা যায়। ট্যাক্সিডার্মির সাহায্যে মৃত সেসব প্রাণীর অবিকল প্রতিরূপ তৈরি করে তা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব। ট্যাক্সিডার্মিস্টরা হচ্ছেন ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অন্যতম মানবসম্পদ। তাই দু-দুটো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আমিনুল ও রায়হান বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ একাধিক ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের জন্যও সম্পদ হতে পারেন। বাংলাদেশ অপেক্ষায় রইল এই দুই তরুণের।

এডমিশন মৌসূমে ছেলেপেলেদের সবচেয়ে হতাশা দেখা যায় কোনো বিষয়ে পড়বে তা নিয়ে। লোকমুখে সিএসই, ইইই কিংবা বিবিএর নাম শুনে শুনে সবাই এগুলোকেও দামী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু সমস্যা হল, অন্য বিষয়গুলোর সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়না। যেকারণে উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণীবিজ্ঞান সহ অন্যান্য বিষয়গুলকে কেউ গুরত্ব দেয়ান। কারণ, এগুলো নিয়েও যে সৃজনশীলতা দিয়ে অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ করা যায়, তা তাদের সামনে তুলে ধরা হয়না।

আমিনুল ও রায়হান ভাই এর প্রাণীবিজ্ঞান থেকে পড়ে পৃথিবীর নামিদামী পুরষ্কার অর্জন নিঃসন্দেহে জুনিয়রদের প্রাণিবিজ্ঞান পড়ার প্রতি আগ্রহ একটু হলেও বাড়াবে।

(দুবছর আগের লেখা থেকে...)

এ সম্পর্কিত আরো লেখাঃ 

ট্যাক্সিডার্মির ভুবনে দুই কীর্তিমান বাংলাদেশি 2016
ট্যাক্সিডার্মিতে আন্তর্জাতিক অর্জন 2014
UTA award 2018 
European Taxidermy Championships
October 24, 2018 No comments
Older Posts Home

Labels

On Point On Topic Special Day

recent posts

Blog Archive

  • April (1)
  • March (2)
  • February (1)
  • January (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • March (1)
  • February (1)
  • October (1)
  • March (1)
  • April (1)
  • March (2)
  • November (1)
  • May (1)
  • November (3)
  • October (2)
  • September (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • June (1)
  • May (2)
  • April (2)
  • March (5)
  • February (1)
  • February (1)

Designed By | Distributed By GooyaabiTemplates