যে পাঁচটি উদ্ভাবন আছে শুধু জাপানেই

by - March 14, 2018

প্রযুক্তির দেশ জাপান। বিশ্বকে প্রযুক্তির উৎকর্ষে চমকে দিতে যে দেশ কখনো কার্পণ্য করেনি। আজকে আমরা সেদেশের এমন পাঁচটি পণ্য নিয়ে আলোচনা করব, যা এখনো অন্য কোথাও নেই।

 ৫। পানি সঞ্চয়ী সিংকঃ

পানিকে বলা হয় জীবন। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমরা জীবনের স্বাভাবিক কাজে কতভাবেই না  পানি অপচয় করি, তা ভাবলেই অবাক হতে হয়। যেমন- ওয়াশরুমেই হাত দোয়ার কাজে অনেক পানি ব্যবহার করি। এরপর টয়লেট এর ফ্ল্যাশ করতেও ভালো পানি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কেমন হবে যদি হাত ধোয়ার পানিগুলোই আবার ব্যবহৃত হবে ফ্ল্যাশের কাজে। তাহলে একই পানি দুবার ব্যবহার করা যাচ্ছে।
হ্যা, এই অসাধারণ বুদ্ধিটাই বাস্তবে রূপ দিয়েছে জাপানিরা। তারা টয়লেটে পানি সাশ্রয়ের জন্য তৈরি করেছে এক অভিনব সিংক, যেখানে হাত ধোয়ার বেসিন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে এবং এরপর সেই পানি জমিয়ে রেখে তা আবার ব্যবহার করা যাবে ফ্ল্যাশের কাজে। আসলেই যুগান্তকারী একটি আইডিয়া।

৪। অন্যরকম টাটানিঃ

আমরা যেরকম বাসার ফ্লোরের হিসেব স্কয়ার ফিট বা মিটারে হিসেব করি, জাপানিরা এমনটা করেনা। তারা এই হিসেব করে একটি বিশেষ আকৃতির মাদুরের, জাপানি ভাষায় যার নাম টাটানি। টাটানির সাপেক্ষে কয় গুণ এই হিসেবে তাদের ফ্লোরের মাপ হিসেব করা হয়। 

প্রথমদিকে টাটানি ছিলো অন্যান্য সাধারণ মাদুরের মতই। কিন্তু XIN YAMASHITA নামে একজন LAND PEEL নামে একধরণের টাটানি তৈরি করেন, সেটা একইসাথে অনেকগুলো চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
এই মাদুরটা একটু শক্ত ও স্থিতিস্থাপক প্রকৃতির। যার কারনে টাটানি দিয়েই ঘরের যাবতীয় ইন্টেরিয়র এর কাজ করা যায়। এটা দিয়ে আপনি সোফা, টেবিল ম্যাট, ওয়ালম্যাট সহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় জিনিষ বানিয়ে নিতে পারবেন। এ ছাড়া এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা যার ফলে এর মধ্য দিয়ে খুব সহজেই বিদ্যুতের তারও চলাচল করানো যায়। টাটানি জাপানের আবাসন গুলতে নিয়ে এসেছে এক নতুন মাত্রা, যেটা জাপানিদের জীবনধারাকে করেছে আরো ইউনিক।

৩। লিবারেশন র‍্যাপারঃ 

ভাবুনতো, আপনি বিশেষ কাউকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এ গেলেন আর পেয়ে গেলেন আপনার সবচেয়ে প্রিয় বার্গার। তখন কি করবেন? নিশ্চয় গাপুস গুপুস খাওয়া শুরু করবেন? কিন্তু সমস্যা হল ওতবড় বার্গার আপনার ছোট মুখেতো একসাথে ডুকবে না। যারফলে আপনার মুখের চারপাশেও লেগে গিয়ে চেহারা নষ্ট হবে। ফলে আপনি পড়তে পারেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। সামনেরজন সহ আশেপাশের মানুষও আপনার দিকে তাকাতে পারে অন্যরকম দৃষ্টিতে।

এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতেই জাপানের একটি রেস্টুরেন্ট নিয়ে এসেছে লিবারেশন র‍্যাপার নামক অভিনব বার্গার র‍্যাপার। এক্ষেত্রে বার্গারের সাথে সুন্দর মুখওয়ালা একটি র‍্যাপার দেয়, ফলে অন্যদের দৃষ্টি ঐ র‍্যাপারেই টকে যায় আর আপনার লোভাতুর খাওয়ার দৃশ্য চলে নিজেরমত। ফলে অন্যেরা কি ভাবছে তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেই আপনি নিজের মতো করে চলতে পারেন স্বাদ উপভোগ।
শুধুমাত্র একটি আইডিয়া দিয়েই জাপানের এই রেস্টুরেন্ট অল্প দিনেই বিখ্যাত হয় এবং হয়ে যায় নারীদের সবচেয়ে প্রিয় রেস্টুরেন্ট। এই পদ্ধতিতে  যেহেতু আপনি স্বাধীনভাবে খেতে পারেন, তাই এর নাম দেয়া হয়েছে লিবারেশন র‍্যাপার।

2। Auto-Revolving, Turning & Retracting Train Seat:

আপনি কোথাও বেড়াতে যেতে ট্রেনে যাচ্ছেন। কিন্তু ট্রেনের সীট হয়ে গেলো যাত্রার দিকের উলটো দিকে। কিংবা কয়েকজন মিলে যাচ্ছেন। আপনার বসা উচিত ছিলো মুখোমুখি হয়ে। অথচ, ট্রেনের স্বাভাবিক নিয়মে সেটা সম্ভব না। কিন্তু অসম্ভব ব্যাপারগুলো সম্ভব করাইতো জাপানিদের কাজ। এজন্য জাপান তাদের ট্রেনের সীট প্ল্যানে পরিবর্তন এনেছে। তারা এমন সীট তৈরি করেছে যেটা টার্নিং। অর্থ্যাৎ এটিকে সামনে পিছনে ঘুরানো যায়। সীটগুলো নিজের ইচ্ছামত দিক পরিবর্তন করতে পারবেন। কিংবা যদি চান তাহলে জানালার দিকে মুখ করেই দুটো চেয়ারকে বসাতে পারবেন। 

১। ছিদ্রযুক্ত মটর সাইকেল হেলমেটঃ

জাপানিদের চিকনা বুদ্ধি থেকে বাচতে পেরেছে কোন জিনিষ। বাইকের হেলমেটেও এর আওতামুক্ত নয়। 
সাধারণ মেয়েরা যখন বাইক চালায়, তখন তারা হেলমেট পরতে চায়না। কারণ এতে তাদের বড় বেণি করা চুল ফিট হয়না। কিংবা কখনো কখনো চুলের ডিজাইন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মেয়েরা এই ব্যাপারটা এড়াতে চায়। 
কিন্তু জাপানিরা এজন্য নিয়ে এসেছে এক অভিনব হেলমেট, যেখানে পিছনে একটা বা দুটা ছিদ্র থাকে, যেখান দিয়ে তারা তাদের অতি প্রিয়ো চুলের বেণীগুলোকে বাইরে রেখে স্বাচ্ছন্দে বাইক চালাতে পারে। আর এই হেলমেট শুধুমাত্র জাপানেই পাওয়া যায়।

সংস্কৃতি ও প্রুক্তির দেশ জাপানা। নতুন নতুন উদ্ভাবন দিয়ে জাপান সবসময়ই আমাদেরকে মাতিয়ে রাখে। এরমধ্যে এই পাচ পণ্য আছে শুধুমাত্র জাপানেই। যেগুলো পৃথিবীর বুকে জাপানের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে বেশ শক্ত করেই ।।

You May Also Like

0 comments