facebook twitter tumblr instagram linkedin
  • Home
  • On Topic
    • On Topic
    • Short Codes
  • Special Day
  • FEC

Mahdi Hasan

সিঙ্গার কর্পোরেশনের জন হয়েছিলো এখন থেকে ১৬৭ বছর আগে, ১৮৫১ সালে।

তবে আজকের দিনের বিশেষত্ব হল , আজ স্যার আইজ্যাক ম্যারিট সিঙ্গার এর জন্মদিন।
Edward Harrison May - Isaac Merrit Singer (October 27, 1811 – July 23, 1875)

মানুষ পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার পর ধন ধৌলত আর সম্মান রেখে যায়, স্যার ম্যারিট সেসাথে রেখে গেছেন ২৪ জন সন্তান!

ম্যারিট ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বলা হয়ে থাকে ইঞ্জিনিয়ারের গফের অভাব হলেও বউ এর অভাব হয়না, তবে সিঙ্গার এর ক্ষেত্রে দুটোই পর্যাপ্ত ছিলো। একে একে সে ৫ জন এর সাথে সংসার পাতে!

হাতের পরিবর্তে যন্ত্রের সাহায্যে সেলাইয়ের প্রচলন হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। বিশ্বের প্রথম শিল্প বিপ্ল­বের সময় সেলাই মেশিন উদ্ভাবিত হয়। তবে এর আগেও সেলাইয়ের কাজে খুব সাধারণ যন্ত্রের ব্যবহার ছিল। ১৮৪৬ সালে এলিয়েস হোউই এই যন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। প্রথমদিকে মেশিনগুলোর নকশা এমনভাবে করা হয়েছিল যা শুধু শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা যেত। তখন যন্ত্রবিশারদ স্যার আইজ্যাক ম্যারিট সিঙ্গার শিল্প-কারখানার পাশাপাশি ঘরে ব্যবহার উপযোগী সেলাই মেশিন তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। ১৮৫১ সালে ধরা করা মাত্র ৪০ ডলার পুঁজি নিয়ে বাসায় ব্যবহার উপযোগী সেলাই মেশিন উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করেন। তার নামানুসারেই কো¤পানির নাম রাখা হয় সিঙ্গার। তিনিই প্রথম সেলাই কলে স্কেল সংযোজন করেন। সিঙ্গার মূলত এলিয়াসের সেলাই মেশিনের সামান্য পরিমার্জন সাধন করেন। মেশিনের চাহিদার কারণে এর বিক্রি বেড়ে যায়। বাড়তে থাকে পুঁজির পরিমাণও।

১৮৭৬ সালে সিঙ্গার মাল্টিন্যাশনাল কো¤পানিতে পরিণত হয়। কো¤পানিটি পৃথিবীর বৃহত্তম ব্যক্তিগত সেলাই কল তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৮৮৯ সালে প্রথম ইলেকট্রিক সেলাই কল বাজারে আনে সিঙ্গার। তখন পৃথিবীজুড়ে এ নমুনার সেলাই মেশিন ছড়িয়ে পড়ে। এ মেশিন ব্যবহৃত হয় হোসিয়ারি শিল্পে। হাত বা পাচালিত মেশিনগুলোর চেয়ে ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে নকশা করা, ফুল তোলা ও বিশেষ ধরনের সেলাইসহ সাধারণ কাজও সহজে এবং কম সময়ে করা যায়। ফলে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।

ব্রিটিশ আমলে ১৯০৫ সালে সিঙ্গার প্রথম বাংলাদেশে আসে। পরে ১৯২০ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি শাখা চালু করে। বর্তমানে সারা দেশেই এই কো¤পানির আউটলেট রয়েছে। বাংলাদেশে একাধিক কারখানাও করেছে।

১৯৮৩ সালে সিঙ্গার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। ২০০১ সালে তারা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৮৮ টাকা। তাদের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৭৭ কোটি টাকা। বাজারে প্রায় ৭ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার রয়েছে। প্রতিবছর তারা মোটা অঙ্কের লভ্যাংশ দিচ্ছে।

জন্মদিনে এই মহান অভিনেতা, ব্যবসায়ী, উদ্ভাবক, জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনুরাগী, প্রেমসম্রাট ও সর্বপরি প্রকৌশলীকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

উইকি
আমাদের সময় 
October 26, 2018 No comments

ট্যাক্সিডার্মি'র নাম শুনেছেন নিশ্চয়।
মৃত প্রাণীর চামড়া ব্যাবহার করে বিশেষ কৌশলে তার মধ্যে জীবন্ত রূপ ফুটিয়ে তোলাই হচ্ছে ট্যাক্সিডার্মি।
বিজ্ঞান ও শিল্পের এক স্বপ্নময় যুগলবন্দী হল ট্যাক্সিডার্মি।

বাংলাদেশের মানুষ এ ধরণের ব্যাপার সাধারণৎ হলিউডের সিনেমাতেই দেখে থাকে।
কেননা, শুধুমাত্র পৃথিবীর বিখ্যাত সব হিস্ট্রি মিউজিয়ামে( লন্ডন, বার্লিন, ওয়াশিংটন প্রভৃতি) প্রাণীদের এ ধরণের শিল্পময় উপস্থাপন দেখতে পাওয়া যায়।

এই কাজটা মোটেও সহজ নয়। দক্ষ ও নিপুণ ট্যাক্সিডার্মিস হতে গেলে ধৈর্য, একাগ্রতা ও প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে সৃজনশীল শৈল্পিক মনের অধিকারী হতে হয়।

আর সম্প্রতি এই গুণগুলোর এক অসাধারণ অভিপ্রকাশ ঘটেছে দুই বাংলাদেশী আমিনুল ও রায়হান এর মধ্যে। ২০১৬ এর ৫-৯ এপ্রিল জার্মানির বার্লিন শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ট্যাক্সিডার্মি কনফারেন্স-২০১৬ উপলক্ষে বাংলাদেশের এই সাফল্যটি এসেছে। বাংলাদেশের দুই তরুণ আমিনুল ও রায়হান চারটি ক্যাটাগরিতে মোট পাঁচটি পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। তার মধ্যে আমিনুল একাই জিতেছেন দুটি প্রথম ও দুটি দ্বিতীয় পুরস্কার। রায়হান জিতেছেন একটি দ্বিতীয় পুরস্কার। আর এ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পেল দু'জন আন্তর্জাতিক মানের ট্যাক্সিডার্মিস্ট। ট্যাক্সিডার্মির জগতে বাংলাদেশও এখন অনন্য এক উচ্চতায়।
জার্মান ট্যাক্সিডার্মি সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। এই প্রতিযোগিতার জন্য কয়েক মাস আগে আয়োজকরা প্রতিযোগিতার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে কয়েকটি প্রাণীর প্রজাতি নির্ধারণ করে। বিশ্বের অন্যান্য প্রতিযোগীর মতো বাংলাদেশের রায়হান ও আমিনুলও সেই চ্যালেঞ্জিং প্রাণী প্রজাতির ট্যাক্সিডার্মি শুরু করেন এবং তাদের সেই তৈরিকৃত প্রাণীগুলো নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। দু'জনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে পাস করে বের হয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে জার্মানির অ্যাফোর্ট শহরে অবস্থিত ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে বিখ্যাত ট্যাক্সিডার্মিস্ট মার্কো ফিশারের তত্ত্বাবধানে ইউরোপের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানে ট্যাক্সিডার্মির বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন আমিনুল ও রায়হান।

এর আগে ২০১৪ সালে (২২-২৭ এপ্রিল) ইতালিতে অনুষ্ঠিত 'ইউরোপিয়ান ট্যাক্সিডার্মি চ্যাম্পিয়নশিপ' প্রতিযোগিতায় এই তরুণদ্বয় যুগ্মভাবে ইউরোপের সব প্রতিযোগীকে হারিয়ে দিয়ে 'বেস্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড' শাখায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

'ইউরোপিয়ান ট্যাক্সিডার্মি চ্যাম্পিয়নশিপ'_ এ ধরনের একটি প্রতিযোগিতা যা সাধারণত চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়। এবারে এই প্রতিযোগিতা ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রোমানদের স্মৃতিবিজড়িত এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্বাক্ষরবাহী লংগরন শহরে গত এপ্রিল মাসে (২২-২৭) অনুষ্ঠিত হয়। ইউরোপের পনেরোটি দেশ থেকে প্রায় ১০০ প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

বিশ্বে ১০০ বছর ধরে ট্যাক্সিডার্মির কাজ চললেও বাংলাদেশে তা মাত্র ৬-৭ বছর। আর এই অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দু'বার অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করল।

বিশ্বে অনেকগুলো ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম থাকলেও বাংলাদেশে একটিও নেই। তবে আশার কথা, ঢাকাতে একটি হিস্ট্রি মিউজিয়াম নির্মানের কাজ চলছে। এরপর প্রতিটি বিভাগেই একটি করে মিউজিয়াম করার পরিকল্পনা রয়েছে ।

বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়মে কিংবা ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন প্রভৃতি কারণে নানা ধরনের অসংখ্য প্রাণী মারা যায়। ট্যাক্সিডার্মির সাহায্যে মৃত সেসব প্রাণীর অবিকল প্রতিরূপ তৈরি করে তা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব। ট্যাক্সিডার্মিস্টরা হচ্ছেন ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অন্যতম মানবসম্পদ। তাই দু-দুটো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আমিনুল ও রায়হান বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ একাধিক ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের জন্যও সম্পদ হতে পারেন। বাংলাদেশ অপেক্ষায় রইল এই দুই তরুণের।

এডমিশন মৌসূমে ছেলেপেলেদের সবচেয়ে হতাশা দেখা যায় কোনো বিষয়ে পড়বে তা নিয়ে। লোকমুখে সিএসই, ইইই কিংবা বিবিএর নাম শুনে শুনে সবাই এগুলোকেও দামী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু সমস্যা হল, অন্য বিষয়গুলোর সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়না। যেকারণে উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণীবিজ্ঞান সহ অন্যান্য বিষয়গুলকে কেউ গুরত্ব দেয়ান। কারণ, এগুলো নিয়েও যে সৃজনশীলতা দিয়ে অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ করা যায়, তা তাদের সামনে তুলে ধরা হয়না।

আমিনুল ও রায়হান ভাই এর প্রাণীবিজ্ঞান থেকে পড়ে পৃথিবীর নামিদামী পুরষ্কার অর্জন নিঃসন্দেহে জুনিয়রদের প্রাণিবিজ্ঞান পড়ার প্রতি আগ্রহ একটু হলেও বাড়াবে।

(দুবছর আগের লেখা থেকে...)

এ সম্পর্কিত আরো লেখাঃ 

ট্যাক্সিডার্মির ভুবনে দুই কীর্তিমান বাংলাদেশি 2016
ট্যাক্সিডার্মিতে আন্তর্জাতিক অর্জন 2014
UTA award 2018 
European Taxidermy Championships
October 24, 2018 No comments



কখনও কি বিস্ময়ের উদ্রেক হয়েছে যে কেন সি ডিফল্ট ড্রাইভ আপনার কম্পিউটার এর? কেন A অথবা B নয়?
কেন উইন্ডোজ সবসময় সি ড্রাইভ এ সেভ হয়???
আপনি যদি প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার ব্যবহারকারী হন, তাহলে সম্ভবত প্রশ্নের উত্তর জানেন.
কিন্তু যদি আপনি কম্পিউটারের অনেক ভক্ত নাও হন , তবুও নিশ্চয় আপনার মন একবার প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে যেত. কেন এমএস উইন্ডোজ কম্পিউটারের মধ্যে ডিফল্ট ড্রাইভ সি ড্রাইভ?
এখন আমাদের উত্তর দেখা যাক. ,
দেখুন যখন প্রথমদিকে কম্পিউটারের বিকশিত হয়েছে, তখন সাধারণত ব্যাপক অভ্যন্তরীণ সংগ্রহস্থল ডিভাইস এর সাথে পতিচয় হয়নি. পরিবর্তে তখন একটি ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভ ছিল. এবং যে ড্রাইভে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল এ ।
ফ্লপি ডিস্ক দুই মাপ, 5 1/4 "এবং 3 1/2"
. তাই কম্পিউটারের উভয় ধরণের ফ্লপির জন্য উভয় A এবং B লেবেল ছিল
শুধুমাত্র 1980 হার্ড ড্রাইভ প্রমিত হয়ে ওঠেছিল. আর তাই তখন কথাটি সি লেবেল করা হয় এবং এই হার্ড-ড্রাইভ কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম-এ সঞ্চয় করতে ব্যবহার করা হয়. ধীরে ধীরে, ফ্লপি ডিস্কের অপ্রচলিত হয়ে ওঠে এবং কম্পিউটারের ফ্লপি ড্রাইভ হারিয়ে যায়. A এবং B ড্রাইভ বিকাশ হয় এবং C রয়ে যায়.
অবশ্যই, এই নিয়ম পাথরের মধ্যে খোদাই করা নেই, এবং যদি আপনি সঠিক নিয়মানুযায়ী জন্য নামের প্রারম্ভে আপনার ইচ্ছামত নামের ড্রাইভ চান, আপনি সহজে administrative অধিকার দিয়ে তা করতে পারেন।
September 30, 2018 No comments
এই ছেলে আর আমার মধ্যে এক্টাই মূখ্য পার্থক্য, আমি বেঁচে আছি আর ও নেই। বাকী গল্পগুলো একই রকম।
ওর জন্ম আর আমার জন্ম একই উপজেলায়, তারপর বেড়ে উঠা শেষে পড়াশোনার জন্য ঢাকায় যাওয়া।
ওর বাসা আমাদের বাসা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে, চৌমুহনীতে।
উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার জন্য দুজনের যাত্রাই ঢাকা। আমি সরকারি বিজ্ঞান আর ও রমিজউদ্দিন। এর পরের গল্পটাও একই হতে পারতো। হয়ত এই ছেলেটারো ইচ্ছা ছিলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তার আর হল কই?
হাতিয়া থেকে যারা বাইরে থাকে তাদের বাসায় যাওয়া হয় বছরে দুবার। দুই ঈদে। এর বাইরে পরিক্ষার লম্বা ছুটি হলে তখন। ওর মাও বসে ছিলো ঈদে ছেলে বাসায় আসবে। আমার পরিবারো এমন। ভাইবোন অপেক্ষায় আছে কবে আমি বাসায় যাবো।
এই ছেলের দিনমজুর বাবা মারা গেছে ছোটবেলায়। তারপর চার ভাইকে মানুষ করার দায়িত্ব একা কাঁধে তুলে নিয়েছেন তার মা। থাকার ঘর নেই, একচিলতে জমি নেই, হাতে টাকা নেই। এমন পরিস্থিতি যাদের আছে অথবা যারা গ্রামে বাস করেন তারাই এর প্রকৃত রূপ চিন্তা করতে পারেন। তবে মনোয়ারা বেগম দমে যাননি। ছেলে দুটিকে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে লেখাপড়া শেখাচ্ছিলেন।
সেই ছেলেটি এবার বাসায় ফিরে গেছে এক মাস আগে।
অথচ তার একটা স্বপ্ন ছিলো, সে হতে পারতো একজন দেশ গড়ার কারিগর।
এরকম স্বপ্ন আমাদের সবারই থাকে এবং প্রতিদিন ভাঙ্গে। কোটি মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গের কাছে একজন হয়তো কিছু না। কিছুদিন আগেও আন্দোলন চলছিলো কোটা সংস্কার নিয়ে। অনেকগুলো ছেলে যাদের স্বপ্ন ছিলো দেশের সেবা করবে, মেধা থাকা স্বত্বেও সিট খালী নাই সাপেক্ষে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। তাই তারা শেষ উপায় রাস্তায় এসে দাড়িয়েছিলো। একজন মানুষ কখন রাস্তায় দাঁড়ায় তা আপনি নিজে না দাঁড়ালে বুঝতে পারবেন না। স্বাভাবিকভাবে একা সবার সামনে গিয়ে দাড়াতেও আমাদের হাটু কাঁপে, সেখানে ছেলেগুলো প্রাণের মায়া ত্যাগ করে পুলিশের মার খেয়েছে, ভাবতে পারেন?
আমাদের স্বপ্ন ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতা মানে চিন্তার স্বাধীনতা, বক্তার স্বাধীনতা। পাকিস্তান তা বন্ধ করে দিয়েছিলো। তাই আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছি । দাঁড়িয়েছি বলতে দাঁড়াতে পেরেছি। আজকের বাংলাদেশে সেই সুযোগটাও নেই। আপনার সরকার আপনার শত্রু। আপনি কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলেই আপনাকে পেটানো হবে। আপনার কোনো স্বপ্ন থাকতে পারবেনা, কোনো চিন্তার স্বাধীনতা থাকতে পারবেনা। আপনি কিছু বলার আগে ভাবতে হবে আপনার জীবন যাবে কিনা!
আপনি কি স্বাধীন?
আমার দেশের রাস্তায় কোনো নিয়ম কানুন নেই। মন্ত্রীরা টাকা খেয়ে যাকেতাকে গাড়ির লাইসেন্স দিচ্ছে আর ড্রাইভারকে দিচ্ছে মানুষ মারার লাইসেন্স। সেখানে আপনি প্রতিবাদ জানাতে গেলে পুলিশ দিয়ে নিরীহ শিক্ষার্থীদের মারা হচ্ছে।
জীবন যাপনের জন্য চাকুরি করবো, সেখানে আমি সমান অধিকার পাবো, সেটা আমাকে রক্ত দিয়ে আদায় করতে হবে একটি স্বাধীন দেশে ?
একটা দেশের ৯০ ভাগ মানুষ যে দাবী জানাচ্ছে সেটা আদায় করতেও আমাকে রক্ত দিতে হচ্ছে।
গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ যা চাইবে তাই হতে হবে, কিন্তু এ সরকার তা করছেনা। কেন বলুনতো?
আপনি যাই বলবেন তার জন্যেই আপনাকে রক্ত দিতে হবে। এরপর বিরোধী মত বলে দমে যেতে হবে।
একটি দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র যখন দলীয়করণ এবং ধরে ধরে দলীয় লোকদের নিয়োগ দেয়া হয়, সেটা একটি একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়।
এই রাষ্ট্রকে আমি গনতান্ত্রিক মনে করিনা। বরং এটি একটি স্বপ্ন মেরে ফেলা রাষ্ট্র।
প্রতিদিন অসংখ্য তরুণের সাথে আমার কথা হয়। তাদের বেশীরভাগের স্বপ্ন কিভাবে এদেশ থেকে যাওয়া যায়। অন্তত নিজের পেট চালিয়ে বাঁচা যাবে এমন একটি দেশের নাম তারা জানতে চায়।
এ দায় কার?
আপনি বলবেন একদিনে সব চেঞ্জ সম্ভব না। আমি বলবো এরকম হয়েছে কয়দিনে?
গত দুদিনে ঢাকা শহরের চেহারা বদলে গেছে। কেন গেছে? কারণ যারা করেছে তারা দলীয়করণ করেনি।
তারা জানে কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। আপনাদের মতো ক্ষমতালোভী না।
হাজার হাজার ছেলে যখন মেধা থাকা সত্বেও কোটার জন্য চাকরি বঞ্চিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জটে পড়ে বয়স শেষ করে চাকুরিতে আবেদনের যোগ্যতা হারায়। দলীয় নিয়োগের শিক্ষকরা যখন পড়াতে না পেরে ছাত্রদেরও অযোগ্য করে তোলে এবং ছাত্ররা ব্যর্থ হয়, সেই দায় অবশ্যই নীতিনির্ধারক সরকারের।
গত দুমাসে ঢাকায় রক্ত জরানো জীবিত আন্দোলনকারীদের কাছে এই দুটো লাশ খুব বেশী কিছুনা, এরা মরে গিয়ে বেঁচে গেছে। কিন্তু যারা বেঁচে থেকে মরছে, তাদের খুনের দায় কে নেবে???
আপনাকে চেঞ্জ আনতে হবে। আপনার নিজের মধ্যে এবং যারা আপনাকে নেতৃত্ব দেয় তাদের মধ্যে।
বুড়ো গরু হাটতে পারে, দৌড়াতে পারেনা। নাকি ভুল বললাম কিছু?
August 01, 2018 No comments
আত্মাহুতি। মানে নিজেকে খুন করা। এই নিজেকে কথাটার আমার কাছে অনেকগুলো জটিল ব্যাখ্যা আছে।

নিজের ব্যাপারটা অনেকরকম হয়। সেক্ষেত্রে আত্মাহুতি শব্দটার প্রায়োগিক ব্যাখ্যা অনেকরকম। নিজের প্রাণ করে দেয়াটা একধরণের আত্মাহুতি হতে পারে।
এক্ষেত্রে একটা অর্থ দাড়াচ্ছে, নিজেকে সবার কাছে প্রকাশ করে দেয়। যতদিন আপনি বেচে থাকবে, ততদিন আপনার সম্পর্কে অন্যদের আচরণ আর আপনি মারা যাবার পর অন্যদের আচরণ একইরকম হবেনা। তখন আপনি সবার কাছে উন্মুক্ত হয়ে যাবেন। এই ব্যাপারটাকে আমি মৃত্যু হিসেবে চিন্তা করি। আপনার স্বাধীনতা, ব্যক্তিত্বে আপনার অধিকার থাকবেনা।

আমার অনেকগুলো সিক্রেট ব্যাপার আছে। এই ব্যাপারগুলো প্রকাশ হয়ে যাওয়াটাও আমার কাছে আত্মহুতি দেবার মতো। যখন এই ব্যাপারগুলো আমি ছাড়াও আরো অনেকি জানবে, তখন সেটাও আমার জন্য আত্মাহুতিমূলক। এখানে "নিজের" ব্যাপারকে আত্মাহুতি দেয়া হয়েছে।

আত্মহত্যা নিয়ে আমার একটা বিশাল প্রবন্ধ আছে। সেখানে লিখেছিলাম, মানুষ কেন আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।
এরমধ্যে প্রধান কারণ হয়, যখন সে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তার নিজের কাছে কিছু থাকেনা। তার সবকিছুই পাবলিক হয়ে যায়।
অন্যভাবে, সে যখন মানসিকভাবে প্রচন্ড ভেঙ্গে পড়ে, বা সবার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়। অথবা খুব কাছের কারো কাছে অপমানিত হয়।

ওপেন সোর্স সামাজিকতার যুগে এখন মানুষের পার্সোনাল বলে কিছু থাকেনা। ফলে তার ব্যক্তিগত কাজেও অনেকের প্রভাব চলে আসে। এক্ষেত্রে সে সিদ্ধান্থীনতায় ভোগে এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এক পর্যায়ে আত্মাহুতির মতো ভয়ানক সিদ্ধান্ত নেয়।

আত্মাহুতি দেয়ার চেয়ে, না দিয়ে কেন বেঁচে থাকে- সেটা নিয়ে আলোচনা বেশী ভালো মনে হচ্ছে।

যখন কেউ প্রচন্ড মানসিক আঘাত পায়, তবুও মৃত্যুর পথ বেঁচে নেয়না, এক্ষেত্রে সবসময় এমন কেউ দায়ী থাকে, যার জন্য সে মরতে পারেনা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই একজন মা, বাবা, বা বিশেষ কেউ একজন হয়- যার মুখের দিকে তাকিয়ে সে মরতে পারেনা। এই একজন অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর, যার কারণে সে মৃত্যুর চেয়েও বেশী কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকে।

আমি এমন কয়েকজন প্যাশেন্ট পেয়েছি, যারা বেঁচে থাকার একমাত্র কারণ ঐ একজন। কখনো সে নিজেই আমাকে বলেছে - সে একজনের জন্য বেঁচে আছে, কখনো আমিই তাকে ঐ একজনের দোহায় দিয়ে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দিয়েছি।

যখন কেউ বলে আমি মরতে চাই, এরমানে সে নিশ্চয় এমন কিছু প্রত্যক্ষ করেছে - যার মধ্যে সে তার সর্বোচ্চ অবলম্বন হারিয়েছে। এবং আমি এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী যা পর্যবেক্ষণ করেছি তাহল, ঐ ঘটনাটা যদি সে ছাড়া আর কেউ না জানে, তাহলে আর আত্মাহুতি দেয়ার সম্ভাবনার চেয়ে অনেকে জেনে ফেললে, তার সম্ভবনা বেশী হয়।

কারণ একা একা অনেককিছুই চেপে রাখার যায়, যা অনেকেই জেনে ফেললে কষ্ট শুধু বেড়েই চলে। আর সেই জেনে ফেলাটাকেই আমি বলি আমার গোপন কথাটা অন্যেরা জেনে ফেলা বা সেই কথাটার আত্মাহুতি, যেটা শারিরীক আত্মাহুতির চেয়েও বেশী কষ্টের। আর যেজন্য সবাই শারিরীক ব্যাপারটাকেই গ্রহণ করতে বেশী পছন্দ করে !! 
July 06, 2018 No comments


হিরোর কি সুনির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা আছে? নাকি সব মন গড়া আর আবেগের মিশেল।

ইতিহাস বলে সবকিছু আপেক্ষিক। বরং যে জয়ী হয়, ইতিহাস তাকেই বীর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, সে যেভাবেই জয়ী হোক না কেন!!

সিনেমায় সাধারণত দেখা যায় একজন খুব খারাপ লোক থাকে। সে সবসময় অত্যাচারী। আরেকজন খুব ভালো মানুষ। অন্যদের বিপদ থেকে রক্ষা করে। সে হয় নায়ক। নায়কের একজন নায়িকা থাকে। দূর থেকে দেখে কিংবা গল্পটাই। এমনভাবে বানানো যেন দর্শক দেখেই বুঝতে পারে কে হিরো। কিন্তু উল্টোভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে, দুজনই কিন্তু নিজের কাজে উপযুক্ত যুক্তি নিয়ে আছে।
অথবা, যদি এমন হয়, দুজনই একটা কাজের আগ্রহী এবং দুজনরই পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু পাবে একজন। তখন আপনি কাকে হিরো আর কাকে ভিলেন বলবেন?

ইতিহাসে ফিরে যাই। প্রাচীন কাল থেকেই কিন্তু এমন দ্বন্দ্ব লেগে আছে। সেই আর্য-অনার্য দের যুদ্ধ থেকেই।

আমাদের পূর্বপুরুষ হল উপমহাদেশের অনার্য। তারা ছিল গুহাবাসী ও বিভিন্ন নদীর তীরে বসবাসকারী। আদিবাসীরা বিভিন্ন টোটেম বা গোষ্ঠিতে বিভক্ত ছিল। দৈত্য, রাক্ষস, পাখী, নাগ, অসুর এগুলা ছিল এখানকার আদিবাসীদের বিভিন গোষ্ঠী, শ্রেণী ইত্যাদিরই নাম।

বুঝতে অসুবিধা হয়না, অনার্যরা আর্যদের বিরুদ্ধে গেরিলা পদ্ধতি ও সামনাসামনি মুক্তির লড়াই অব্যাহত রেখেছিল। কিন্তু জয় হয় শেষ পর্যন্ত আর্যদের। তাড়াতে তাড়াতে অনার্যদের নিয়ে যাওয়া হয় সুদূর শ্রীলংকা পর্যন্ত। সেখানেও লড়াই হয়। রাম-রাবনের যুদ্ধ তারই স্মৃতিবাহী।
কিন্তু আর্যদের এ জয় শুধু প্রভুত্বে নয়, ছিল শিল্প-সংস্কৃতিরও জয়। ফলে অনার্য রাক্ষস খোক্ষসরা আর মানুষ থাকলো না, হয়ে গেলো দানব, অসুর, দৈত্য ইত্যাদি। এই অঞ্চলের সমগ্র ভারতীয় আদিবাসীরা জন্তুতে পরিণত হল ইতিহাসে।

অথচ কি আশ্চর্য, আমরা আমাদের সন্তানদের রাক্ষস খোক্ষসের নেতিবাচক গল্প শোনাচ্ছি। আর এভাবেই আমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদের কাছে ভীতির এবং ইয়ার্কির পাত্র হয়ে উঠেছে।

অথচ এ লড়াই ছিল সমান। হিরো হবার কথা ছিল অনার্যদের, যারা নিজেদের প্রাপ্য অধিকার আদায়ে লড়াই করেছে। জোরদখলদারদের রুখতে জীবন দিয়েছে। তাদের আমরা হিরোর স্বীকৃতি দেয়ার কথা। কিন্ত হিরো হয়ে গেলো দখলদার আর্যরা। ইতিহাস জয়ীদের পক্ষেই লেখা হয়।

ভারতীয় পর্বে আসি। ১৭৫৭ তে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ে ইংরেজরা জয়ী হয়।
মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় সেই যুদ্ধে জয়লাভ করে লর্ড ক্লাইভ।
এ যুদ্ধের পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত ইংরেজ সাহিত্য ও অধ্যুষিত ভারতীয় উপমহাদেশ এ প্রচলন ছিল জাফর একজন অনুগত বীরসেনা ও সিরাজ ভীতু, কাপুরুষ, পরাজিত দেশদ্রোহী নবাব হিসেবে!!

যদিও অনেক পরে উপমহাদেশের মানুষ প্রকৃত সত্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং মীর জাফর প্রতারক বিশ্বাসঘাতক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অথচ শুধুমাত্র পরাজয়ের ফলেই ভিলেন পেয়েছিল বীরের মর্যাদা। ইতিহাস এমনি হয়।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আসি। ৭১ এ যদি বাঙ্গালিরা পরাজিত হত, তাহলে বিশ্বদরবারে সেদিনের ইতিহাস অন্যরকম হত। এখন বাংলাদেশীরা যেভাবে পাঠ্যবই এ পাকিস্তানিদের দখলবাজ, অত্যাচারী হিসেবে জানছে, তখন সেটা হত বাংলাদেশীরা। মুক্তিযোদ্ধারা হত দেশোদ্রোহী, গাদ্দার, যেটা যুদ্ধ চলাকালীন সময়েই শেখ মুজিব, পাকিস্তান আর্মিতে বিদ্রোহ করা জিয়া, ওসমানী, মতিয়ুররা পেয়েছিলেন। অন্যদিকে পাকিস্তান আর্মির সৈন্যরা হত দেশপ্রেমী অকুতোভয় সেনা। এদেশে যারা তাদের সহযোগীতা করেছে, তারা হত অনুগত বন্ধু। সব জায়গায় তাদের কৃতিত্ব থাকতো। অথচ দুদলের লক্ষ্য ছিল জয়। পরিস্থিতি প্রেক্ষাপট বদলে দেয়। কে বীর আর কে ভিলেন তা পরিবর্তন হতে বেশীক্ষণ লাগেনা।

তাহলে বীর আর ভিলেন নির্ধারণের মানদণ্ড কি হবে? সিনেমায় ভালো আর খারাপ মানুষ দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই। ইতিহাস পড়ে জানলাম যে জয়ী, তারা তাদের মতো ইতিহাস লেখে। প্রকৃত সত্য অধিকাংশ সময়েই আড়ালে থাকে। তাহলে আমি হিরো কাকে বলবো?

সমসাময়িক প্রেক্ষাপট এ আসি।

দুজন ছেলেমেয়ে পরস্পরকে ভালোবাসে। পরিবার রাজি হলে সবকিছু ঠিক আছে। মেয়েটাও এই ছেলেকে ছাড়া কিছু বোঝেনা। একেবারে রিয়েল লাভ।

মেয়েটাকে আরেকটা ছেলে পছন্দ করে। সে মেয়ের পরিবারকে ম্যানেজ করে তাকে বিয়ে করে ফেলে। পরিবারের বিরুদ্ধে যাওয়া সম্ভব না। তাই মেয়েটাও সবকিছু সহ্য করে নেয়। সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু পরিবারের দিকে তাকিয়ে কিছু করতে পারবেনা। পরের ছেলেটা সবই জানে। সে ইচ্ছা করেই এমন করেছে। সবকিছুই এখন তার।

সেও একদিন গল্প বলবে , আমি সবকিছু জয় করেছি। আরেকজন আমার কাছ থেকে ওকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি তা হতে দিইনি।

হিরো কে হল?
June 20, 2018 No comments







বেশ কয়েকদিন ধরে খুব বেশী বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর শিকার হচ্ছে দরিদ্র ও ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকরা।




বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্ষা আসার আগমুহূর্তে এপ্রিল-মে মাসে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এতে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে ভেসে আসা আর্দ্র বায়ু আর উত্তরে হিমালয় থেকে আসা শুস্ক বায়ুর মিলনে কালবৈশাখী বয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঝড়ের সময় বেশি বজ্রপাত ঘটে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ধাতব পদার্থের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া, বনভূমি কমে যাওয়া, জলাভূমি ভরাট ও নদী শুকিয়ে যাওয়া বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ।




গত দুই মাসে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ ছুঁই ছুঁই করছে। যার ৯০ শতাংশই কৃষক। এ সময়ে বজ্রপাতে আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষ। এদের মধ্যে কারও শরীরের আংশিক, কারও সম্পূর্ণ অংশ পুড়ে দগদগে ক্ষত তৈরি হয়। এই ক্ষত সারানোর সুযোগ না পেয়ে ভাগ্যাহত এসব মানুষের স্বপ্ন এবং সম্ভাবনাও পুড়ে শেষ হয়ে যায়।

বজ্রপাতের সময় প্রায় ৬০০ মেগাভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য ১০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ যথেষ্ট। আওয়াজ হওয়ার আগেই বজ্র মাটি স্পর্শ করে। তাই বোঝার আগেই আক্রান্ত হন অনেকে। বজ্রপাতে মাত্র ১ সেকেন্ডেরও কম সময়ে একজন মানুষের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে স্পর্শ করাও বিপজ্জনক। এ কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করতে গিয়েও দগ্ধ হন অনেকে।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিস ও জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার ৪০০ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৩০০ মানুষ মারা যান। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। কিন্তু সেখানে মৃতের সংখ্যা ৪০-৫০ জন। নাসা ও মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে এবং জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভেনিজুয়েলার মারাকাইবো লেক এলাকায় সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত আঘাত হানে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞানের অধ্যাপক এমএ ফারুকের নেতৃত্বে এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা বছরে দুই থেকে আড়াইশ'।




সরকারিভাবে বজ্রপাতের ক্ষতি কমাতে দেশব্যাপী ৩২ লাখ তাল বীজ রোপণ করা হয়েছে। বজ্রপাত বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে টিলিভিশনে প্রচার চালানো হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা ও হাওরাঞ্চলে নিবিড় টিলা তৈরি করা হবে।

বজ্রপাত থেকে জানমালের ক্ষতি কমাতে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বজ্রপাতের অন্তত ১০-১৫ মিনিট আগে এর সংবাদ জানা যাবে। তাৎক্ষণিকভাবে সেই তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ও মোবাইলে ওয়েদার অ্যাপের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। দেখার বিষয় অনগ্রসর গ্রামীণ মানুষদের জন্য এটা কতটা সুফল বয়ে আনে।

পরিসংখ্যান বলছে, বজ্রপাতে নিহতের চেয়ে আহতের সংখ্যা অন্তত দশগুণ বেশি। বজ্রপাতে আহত রোগীদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া জটিল। বাংলাদেশে বজ্রপাতে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নেই। পাওয়া যায় না ওষুধপত্রও। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বজ্রপাতের আহতদের বিদ্যুৎস্পর্শে ও আগুনে পোড়া রোগীদের প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। গ্রামাঞ্চলে বজ্রপাতে আহতের সংখ্যা বেশি। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এ-সংক্রান্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয়।




তাই বজ্রপাত চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও এর ক্ষয়ক্ষতিরোধকল্পে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রয়োগ বেশী গুরত্বপুর্ণ।
May 29, 2018 No comments


ব্যস্ত এই শহরে প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষের দেখা মেলে। তাদের কয়জনকে আমরা আলদাভাবে চিনি? এদের মধ্যে কিছু মানুষ থাকে যারা অন্যান্য মানুষদের চেয়ে আলাদাভাবে নিজের জীবন পরিচালনা করে থাকে।

প্রায় সময় দেখা যায়, মেধাবী বা বুদ্ধিমান লোকজন গড়পড়তা লোকদের চেয়ে একটু আলাদা থাকতে চায়। তাই এটাই স্বাভাবিক, তারা প্রয়োজন ছাড়া অন্যদের সাথে কথা বলা একদম এড়িয়ে যায়। অপ্রয়োজনীয় দেখা সাক্ষাৎ তাদের খুবই অপছন্দ এবং এমনও হয় যে নিজদের সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও তাদের উপস্থিতি যতসামান্য চোখে পড়ে।

তারচেয়ে বড় ব্যাপার হল, এরকম লোকগুলো বেশী কথা বলা কিংবা তর্কের চেয়ে চুপচাপ শুনতে পছন্দ করে। কোলাহল ও ব্যস্তময় জীবনের চেয়ে দূরে একাকী জীবন যাপনে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য সবচেয়ে বেশী।

The British Journal of Psychology, London School of Economics এর evolutionary psychologists সাতোশি খানজাওয়া ও Singapore Management University এর নরম্যান লি এর একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানকার মূখ্য বিষয় হল একটি সুখী জীবনের জন্য কি কি উপাদান প্রয়োজন হয়। আধুনিক বিশ্বে অধিকাংশ মানুষ আর ব্যক্তিগত নির্দেশিকার জন্য পুরোহিত বা দার্শনিকদের কাছে যায়না; তার পরিবর্তে জরিপ গবেষক, অর্থনীতিবিদ, জীববিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানীদের কথা শুনছেন। এরকম মানসিকতার ১৫০০০ মানুষ নিয়ে এক জরিপে দেখা যায়, ঘনবসিত অঞ্চলে বসবাসকারি তাদের প্রায় সবাই নিজেদের নিয়ে সুখী, কারণ এদের মধ্যে খুব অল্পই আছে, যারা উচু চিন্তাধারী বা বুদ্ধিমান।

বর্তমান সময়ে সবাই সুখী হতে চায়। কিন্ত এতে আশ্চর্যের কিছু নেই যে, এতো মানুষের মধ্যেও একা থেকে কিভাবে সুখী হওয়া যায়!! কেননা তারা এভাবেই নিজেদের পরিবেশ গড়ে নিয়েছে।

এই জরিপে সাতোশি ও নরম্যান দেখেছেন যে, অধিক মানুষের ভীড়ে থাকার চেয়ে ভালোবাসার মানুষের মধ্যে থাকাটাই তাদের বেশি পছন্দ এবং এতে বেশী ভালোলাগা কাজ করে। সমাজের অধীক মানুষের সাথে অনেক সময় ব্যয় কয়ার চেয়ে একজনের সাথে অল্পকিছুক্ষণ বেশি সুখী হতে সাহায্য করে। যার ফলে তাদের সুখী থাকার হারটাও বেশী।

বরং এও দেখা যায় যে, উচ্চ বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন লোকজন বেশী মানুষের মধ্যে থাকলে বরং তাদের সুখী ভাবটা অনেক কমে যায়।

এটাকে গবেষকরা বলে থাকেন - উচ্চ বুদ্ধিমত্তার লোকদের নিম্ন জীবন সন্তুষ্টি ।

ওয়াশিংটন পোস্ট এর ক্যারোল গ্রাহাম এ ব্যাপারে বলেছেন- উচ্চ বুদ্ধিমত্তার লোকগুলো স্বল্পকালীন সামাজিকতার বিষয়ে সময় না দিয়ে এই সময়টা তাদের নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী ফোকাস কাজ গুলোতে দিয়ে থাকেন। যা অধিক কার্যকর।

সুখ এর বিখ্যাত থিওরি, সাভান্না থিওরি অনুযায়ী, মানুষ সুখী হবার জন্য সেসকল কাজই করে, যা আদীম মানুষ করতে পছন্দ করতো। সাভান্না থিওরি অনুযায়ী, কম ঘনত্বের জনসংখ্যায় মানুষ বেচে থাকার জন্য বেশী বেশী আলাপচারিতের প্রয়োজন । এই গবেষণা অনুযায়ী, উচ্চ বুদ্ধিমত্তার লোকদেরকেও এখন নিজেদের বেশী আলাপচারিতে করতে হচ্ছে। কারণ অতীতেও মানুষজন কম ঘনত্বের অধীবাসী হওয়ায় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বেশী রাখতো। কিন্তু থিওরি আর রিয়েলিটি কি এক?? আমার মনে হয়না। মেধাবী লোকগুলা গম্ভীরই হয়ে থাকেন এবং সবসময় নিজেদের নিয়েই মেতে থাকেন।

তবে, বুদ্ধিমান বা মেধাবী লোকদের কথা কম বলা কিন্তু সমাজের জন্যই উপকারী। তারা তাদের সময় গল্প গুজবে ব্যয় না করে তাদের কাজে ব্যয় করে ফলে নিজের কাজে অগ্রগতিতে সক্ষম হয়। এবং সমগ্র মানবতার জন্য জীবনের মান অগ্রগতিতে সক্ষম হয়। সম্ভবত আধুনিক সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে জনসংখ্যার অধিকাংশই একসঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করে, তাই ব্যক্তিবিশেষের কাছ থেকে ঘনিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সহায়তার পরিবর্তে বরং তা বাধাগ্রস্ত হয়।

May 24, 2018 No comments
 কাই ফু লি একজন চীনা উদ্যোক্তা । তিনি হলেন চীনা এ আই প্রতিষ্ঠান সিনোভেশন ভেঞ্চার এর সিইও এবং  Sinovation Ventures Artificial Intelligence Institute এরপ্রেসিডেন্ট।

কিছুদিন আগে এ আই নিয়ে একটি সম্মেলনে এম আই টি তে গিয়েছিলেন কাই। যাওয়ার পথে একটি উবার এ চড়েন। এ প্রসঙ্গে বলে রাখি উবার হল বর্তমানে এই নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের পুরো সিস্টেম এই আই নিয়ন্ত্রিত।

তো, তখন ড্রাইভার তাকে জিজ্ঞেস করল, স্বনিয়ন্ত্রিত গাড়ি তার চাকুরি কেড়ে নিতে কত বছর লাগতে পারে?
তখন তিনি জবাব দিলেন ১৫-২০ বছর। ড্রাইভার কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। তখন ড্রাউভার বললেন, ততদিনে আমিও ড্রাইভার থাকবোনা।

কিন্তু তাৎক্ষণিক তিনি ভাবলেন যদি চীনে তিনি এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতেন, তখন উত্তরটা ভিন্ন হতো। তখন চীনের ড্রাইভারকে বলতে হত, তার চাকরী যেতে ১০ বছর লাগবে। সর্বোচ্চ হলে সেটা ১৫ হতে পারে।

এটা শুনতে আশ্চর্যজনক হতে পারেন, কারণ এটাও ঠিক যে শুরু থেকেই আমেরিকা এ আই তে এগিয়ে ছিলো এবং এখনো আছে। তবে চীনও দ্রুত এই রেস এ এগুচ্ছে। যদিও এখনো পুরোপুরি নয়, কিন্তু এটি নিরব এক প্রতিযোগীতা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এআই উন্নয়ন ক্ষেত্রে নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন। তথ্য অনুযায়ী, চীনের তুলনায় আমেরিকান এআই কোম্পানির সংখ্যা 1.82 গুণ বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ আইতে  বিনিয়োগ চীনের চেয়ে বেশী 1.54 গুণ এবং এ আইতে দক্ষ জনশক্তি 2.01 গুণ বেশী। বিশ্বে এআই কোম্পানীর মোট সংখ্যা (২542 । ২017 সালের জুন অনুযায়ী), তাদের মধ্যে ইউএস এর অর্থায়নের সংখ্যা 42% এবং চীন ২3% এর মাধ্যমে রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এই দুই দেশ ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সুইডেন, সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য উন্নত দেশগুলিকে পিছু হটিয়েছে। রিপোর্টটি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিছনে পিছিয়ে থাকার কারন শুধু  অবস্থানই নয়, একটি প্রধান বাধা হল এআই প্রতিভার অভাব। পরিসংখ্যানগুলি দেখায় যে মার্কিনে এর  সংখ্যা  78,000 এবং  চীনে যার পরিমাণ অর্ধেকেরও কম  39,২00 জন এআই বিশেষজ্ঞ রয়েছে। এর পিছনে্র কারণ উন্নত মানের প্রশিক্ষণের অভাব । এআইএর মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২0 টি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে  16 টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত। চীনের বর্তমান একাডেমিক ক্ষমতা চাহিদা মেটাতে যথেষ্ঠ নয়।
এগিয়ে যেই থাকুক, আসল কথা হল এ আই আসছে!!

তবুও এই রেসে চীনের জেতার চান্স ৫০-৫০।
সাধারণভাবে এটা মেনে নেয়া কঠিন। কারণ আমেরিকা সবসময় এসব দিকে এগিয়ে। কিন্তু বেশ কয়েকটা কারণ আছে, যেগুলাতে আমি চীনকে এগিয়ে রাখবো।

প্রথমতঃ চীনের এক বিশাল গনসৈনিক আছে, যারা এ আই তে এগিয়ে আসছে। গত এক দশকে চীনে প্রকাশিত এ আই নিয়ে গবেষণায় লেখকের সংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। চিনা ফেস রিকগনিশন প্রতিষ্ঠান Face++ এর ইঞ্জিনিয়াররা তিনটি কম্পিউটার ভিশন চ্যালেঞ্জ এ গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট ও কার্নেগী মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দলগুলোকে হারিয়ে প্রথম স্থান জিতে নিয়েছে।

দ্বিতীয়তঃ চীনের এক বৃহত্তম তথ্য ভাণ্ডার রয়েছে যেটা আমেরিকার চেয়ে অনেক বেশী। ডাটা হল এমন জিনিষ, যেটা এ আই তে সবচেয়ে বেশী গুরত্বপূর্ণ। কয়েক টন ডাটা ওয়ালা একজন সাধারণ বিজ্ঞানী সামান্য পরিমাণ ডাটা ওয়ালা একজন সুপার সাইন্টিস্টকে সহজেই হারিয়ে দিতে পারে। চীন হল বিশ্বের সবচেয়ে বেশী মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহকদের দেশ যা আমেরিকার চেয়ে তিনগুণ। কিন্তু এই পার্থক্যটা আর বড় হবে, কারণ চীনের মানুষ কোনো ক্যাশ টাকা বহন করেনা। তারা তাদের যাবতীয় খরচ পরিশোধ করে থাকে ফোনের মাধ্যমে। ফোনের মাধ্যমেই তারা তাদের সকল শপিং করতে পারে। কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার আগেই একটি এপের মাধ্যমে যদি আপনি খাবার অর্ডার করে থাকেন, আপনার আগেই সেটা ইলেক্ট্রিক মটর বাইকে করে আপনার বাসায় পৌঁছে যাবে। চীনে শেয়ারিং সাইকেলের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০মিলিয়ন রাইড ৩০ টেরাবাইট ডাটা উৎপন্ন করে থাকে, যা আমেরিকার প্রায় ৩০০ গুণ বেশী।

তৃতীয়তঃ চীনের এ আই কোম্পানিগুলো অনেক আগেই কপি-পেস্ট যুগ পার করে এসেছে। ১৫ বছর আগেও চীনের প্রতিটি নতুন স্টার্ট আপ ছিলো আমেরিকান পণ্যের বৈশিষ্ট্য, চেহারা, এবং ভাবের কপি। কিন্তু সেসকল উদ্যোক্তারা এখন শিখে গেছে কিভাবে কপি থেকে শিক্ষা নিয়ে তারচেয়ে ভালো জিনিষ তৈরি করা যায়। এমনকি, বর্তমানে উইবো টুইটারের চেয়ে ভালো। অন্যদিকে উইচ্যাট ফেসবুক মেসেঞ্জারের চেয়েও ভালো সার্ভিস দিচ্ছে।


এবং চতুর্থতঃ চীনের সরকারও এ আই কে ত্বরান্বিত করছে। চীনের সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২0২0 সালের মধ্যে এ আই প্রযুক্তি এবং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যেম যুক্তরাষ্ট্রেকে ধরা হবে এবং  ২030 সালের মধ্যে চীনকে বিশ্বের সামনে একটি  উদ্ভাবনী হাব হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। অক্টোবরে একটি বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইন্টারনেট এর যাবতীয় ব্যবহার, বিগ ডাটা ও এ আই এর সাথে রিয়েল ওয়ার্ল্ড ইকোনমির যোগসূত্র স্থাপনে  উৎসাহিত করেছেন। এবং আপনি যদি এসব দেখেই অবাক হন, তাহলে আপনার জন্য আরো অনেককিছু বাকী আছে। দীর্ঘদিন আগে থেকে নেয়া পলিসি ও নিয়মগুলো  চীনকে সহায়তা করেছে দ্রুত গতির ট্রেন, গণ উদ্যোক্তা তৈরি এবং উদ্ভাবন কাজে এগিয়ে নিতে। তুলনামূলক হিসেবে বলা যায়,  প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সৌর-প্যানেল নির্মাতা সলেন্ড্রের ঋণের গ্যারান্টিটি ক্রনিক পুঁজিবাদ হিসেবে অভিহিত হয়েছিল। ট্রাকচালকরা এখন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কংগ্রেসকে স্বচালিত ট্রাকের পরীক্ষা বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। যে পরিস্থিতি চীনে নেই।

এ আইতে চীনের সুপার পাওয়ার হিসেবে উত্থান চীনের কাছে বিশেষ কিছু না। তবে এটাও ঠিক যে, চীন ও আমেরিকার মধ্যেকার এই প্রতিযোগীতা কখনো থামবার নয়। পরিবর্তন বৃহৎ পরিসরেই হবে এবং এর সবকিছু যে ভালো হবে তাও কিন্তু নয়।
গবেষণা মতে, চীনের প্রধান শক্তি বুদ্ধিমান রোবোট তৈরি, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশন চ্যাম্পিয়ন হিসাবে দাঁড়িয়েছে।
 ইতিমধ্যেই উবার গুগলের সহায়তায় একটি নতুন ল্যাব তৈরি করেছে, যেখানে শুধুমাত্র এ আই নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সিআইএ এর নতুন ল্যাঙ্গুয়েজ এডওয়ার্ডকে কিভাবে এ আইতে যুক্ত করা যায়, সেটা নিয়েও এখানে কাজ হচ্ছে।
এ আই তে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হল ফান্ডিং। যদিও বিশ্বের মোট ফান্ডিং এর ৫১% করে আমেরিকা।

1999 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম এআই বিনিয়োগের করে। যা থেকে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এআই বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে 191.4 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।  31 শে জুন, ২017 তারিখে, চীনের এআই কোম্পানিগুলি বিশ্বের 63.5 বিলিয়ন ডলার বা 33.18% এআই তহবিল পেয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 51.10% ( 97.8 বিলিয়ন আরএমবি) নিয়ে এগিয়ে রয়েছে, যেখানে বাকি পৃথীবির সবার পরিমান 15.73%।

২016 সালে  চীন তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছাকাছি পৌঁছায়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি বড় চুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যায় । চীন এর 2017 সালের মোট এআই অর্থায়ন উল্লেখযোগ্যভাবে H1 হিসেবে চিহ্নিত হয়।

আরেকটি আকর্ষণীয় টুকরা তথ্য হল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (51%) এর  চেয়ে চীন  (69%) বিনিয়োগ করে এখন এআই কোম্পানিগুলির  মধ্যে এগিয়ে রয়েছে । এটা দেখায় যে চীনের এআই উন্নয়ন জন্য প্রধান সমস্যা তহবিলের অভাব নয়, বরং প্রযুক্তি এবং প্রতিভার অভাব।
চীনে এ আইতে সর্বাধিক প্রভাবিত  শিল্প তালিকা দেখা যাক-

চীন, মেডিকেল ইমেজিং এবং মেডিকেল রেকর্ড বিশ্লেষণ সহ চিকিৎসা শিল্পে এআই অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটি আকর্ষণীয় এলাকায় পরিণত হয়েছে । এই ক্ষেত্রটি অনেকদিন ধরে দুর্বল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত যন্ত্র দ্বারা উপকৃত হয়েছে। এথেকে বলা যায় যে, চীনে এ আই এরকম কাজগুলির জন্যেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়।
এরপরেই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্ব- ড্রাইভিং এবং এসিস্টেড ড্রাইভিং। এর পরেই আছে শিক্ষা, অর্থ, উত্পাদন, নিরাপত্তা, বাড়ি এবং অন্যান্য শিল্প ।
এর মধ্যেই চিন  হাংঝৌ কে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ন্ত্রিত “স্মার্ট সিটি” হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাও এর বয়স একবছর পার হয়ে গেছে। হাংঝৌ শহরে নয় মিলিয়নেরও বেশি মানুষের বাস। ২০১৬ সালের অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা আর তাইওয়ানের ইলেক্ট্রনিক্স কনট্রাক্ট মেনুফ্যাকচারিং জায়ান্ট ফক্সকন মিলে এই “সিটি ব্রেইন” প্রোজেক্ট তৈরি করে। আর এরপর থেকেই এই শহরটা অন্তত আংশিকভাবে হলেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে যা শহরের প্রত্যেকটি ডেটা তার ভারচুয়াল মস্তিষ্কে শোষণ করে নেয়।

এ থেকেই অনুমেয় চীন এ আইতে কতটা এগিয়ে যাচ্ছে, এবং তুলনামূলক হিসেব করলে এখানকার সরকার ব্যবস্থা এরকম কাজের জন্য অনেকাংশে উপযোগী। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা হওয়ায় যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় পড়তে হয়না। এবং এটাও আমেরিকার চেয়ে চীনকে এগিয়ে যেতে অনেকাংশে সহায়তা করছে। উপরিউক্ত কারণগুলোই আমাদেরকে চীনকে এগিয়ে রাখতে সহায়তা করছে। 

তবে চ্যালেঞ্জে যেই জিতুক  পরিবর্তন আসছে, এবং আমরাদেরকে  সম্পূর্ণ স্বীকার করে নিতে হবে। সেজন্য  আমাদেরকে এমন কাজগুলি খুঁজে বের করতে হবে যা এআই করতে  পারবে না এবং সেগুলো মানুষকে দিয়ে করানোর জন্য ভাবতে হবে।  আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির প্রয়োজন। এই সময়টাই হতে পারে সবচেয়ে সেরা  অথবা সবচেয়ে খারাপ ।  কারন ভবিষ্যৎ পৃথিবী এখনকার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।

উবার ড্রাইভারের মতো অনেকেই আছেন নিজেদের চাকুরি নিয়ে চিন্তিত। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে তাদের বিকল্প ব্যবস্থাটাও এখন থেকেই আমাদেরকে ভাবতে হবে। তবেই তা হবে টেকশই ও সুদূরপ্রসারী...

আরো তথ্যঃ China vs US: Who is winning the big AI battle?
Bangladesh's Future Technology thinking
Flag Counter
April 22, 2018 No comments
Newer Posts Older Posts Home

Labels

On Point On Topic Special Day

recent posts

Blog Archive

  • April (1)
  • March (2)
  • February (1)
  • January (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • March (1)
  • February (1)
  • October (1)
  • March (1)
  • April (1)
  • March (2)
  • November (1)
  • May (1)
  • November (3)
  • October (2)
  • September (1)
  • August (1)
  • July (1)
  • June (1)
  • May (2)
  • April (2)
  • March (5)
  • February (1)
  • February (1)

Designed By | Distributed By GooyaabiTemplates